আগে দুটো বিয়ে ছিল অভিনেতা এবং উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের। তিন নম্বর বিয়ে করেছেন নিজের থেকে ২৭ বছরের ছোট অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজকে। বিগত ১০ বছর ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে লালন করেছেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী। এই দশ বছরে বন্ধু থেকে প্রেমিকা, প্রেমিকা থেকে কীভাবে মিসেস কাঞ্চন মল্লিক হলেন শ্রীময়ী, তা খোলামেলা নিজেই জানিয়েছেন অভিনেত্রী। বয়সে ২৭ বছরের বড় কাঞ্চনকে বিয়ে করা নিয়ে ট্রোলিংয়ের শিকার তিনি। কাঞ্চন বিবাহিত, তায় এক সন্তানের পিতা, এমন পরিস্থিতিতে তাঁর জীবনে প্রবেশ করে, বন্ধুত্ব এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে সমালোচিত হয়েছেন শ্রীময়ী। পক্ষান্তরে তাঁকে কাঞ্চনের ‘মাল’ সম্বোধনও করা হয়েছে। সে ব্যাপারেও শরব হয়েছেন ২৬ বছর বয়সি শ্রীময়ী চট্টরাজ। তবে পরিবার-পরিজন পাশে থাকায় এই কঠিন সময়টা অতিক্রম করেছেন অভিনেত্রী। যাবতীয় মানসিক অবসাদ কাটিয়ে মুখে চওড়া হাসি ফোটাতে পেরেছেন । চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ, অর্থাৎ প্রেম দিবসেই নিজের প্রেমিককে সম্পূর্ণভাবে পেয়েছেন শ্রীময়ী। সেই দিনই আইনি বিয়ে সেরেছেন শ্রীময়ী-কাঞ্চন। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ার পর্দায় ছড়াতেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন শ্রীময়ী এবং কাঞ্চন মল্লিক।
কাঞ্চন মল্লিক দু’বার বিয়ে করেছেন। প্রথম বিয়ে তিনি করেছিলেন অভিনেত্রী অনিন্দিতা দাসকে। সেই সময় কাঞ্চন ‘জনতা এক্সপ্রেস’ নামের একটি নন-ফিকশন শোয়ের সঞ্চালক ছিলেন। ইন্ডাস্ট্রিতে এক্কেবারে নতুন। স্ট্রাগল করছিলেন। সেই পরিস্থিতিতে তাঁর ভক্ত হয়ে জীবনে প্রবেশ করেছিলেন অনিন্দিতা দাস। অনিন্দিতার বয়স ছিল খুবই অল্প। বদ্ধপরিকর ছিলেন, বিয়ে করলে, কাঞ্চনকেই করবেন। মেয়ের অনড় সিদ্ধান্তের সামনে নতজানু হয়েছিল অনিন্দিতার পরিবার। সেই বিয়েটা হয়েছিল ২০০৬ সালে। সাড়ে সাত বছরের সংসার ছিল অনিন্দিতা-কাঞ্চনের।
সেই বিয়ে ভাঙার পর ২০১১ সালে অভিনেত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিয়ে করেছিলেন কাঞ্চন। ‘সংসার সুখের হয় রমণী’র গুণে ধারাবাহিকে স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করছিলেন কাঞ্চন-পিঙ্কি। সেই ধারাবাহিক একসঙ্গে অভিনয় করতে-করতে একে-অপরকে মন দিয়ে ফেলেছিলেন এই দুই অভিনেতা। পিঙ্কির স প্রায় ১০ বছরের সম্পর্কে একটি পুত্র সন্তানও জন্মেছে। পুত্র ওশ এখন ক্লাস ফাইভে পড়ে। স্ত্রী বর্তমান, এক সন্তানের পিতা, আগেও একটা বিয়ে ছিল, এমন এক পুরুষকে কেন বাড়ির জামাই হিসেবে মেনে নিল শ্রীময়ীয়ের পরিবার? তা সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন শ্রীময়ী স্বয়ং।
তিনি বলেছেন, “বিষয়টা নিয়ে আমার পরিবারের প্রথমে দুশ্চিন্তা ছিল। আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন বাইরের লোকজন। বলা হয়েছিল, আমি একটা সুন্দর সংসার ভাঙছি। আমি একটি পরিবার নষ্ট করছি। এ সমস্ত কিছু দেখে-শুনে আমার বাবা-মা এবং বাড়ির বয়স্করা আতঙ্কে ছিলেন। তার আগে কোনওদিনও আমার ব্যাপারে কোন ধরনের খারাপ কথা এর আগে শোনা যায়নি। বাবা-মা আমাকে বিশ্বাস করেন। এবারও করেছিলেন। ফলে এই সমস্ত গসিপে আমি মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলাম। একবার দুর্গা পুজোর সময় আমার ঠাকুমা-ঠাকুদার কাছে এসে কাঞ্চন বলেছিলেন, ‘আমার জন্য শ্রীময়ীর বদনাম হচ্ছে, আমিই ওকে সুনাম এনে দেব’। কাঞ্চন কথা রেখেছে। ওকে আমি স্বামী হিসেবে পেয়ে গর্বিত। নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করছি। আমার পরিবারও কাঞ্চনকে মেনে নিয়েছে জামাই হিসেবে। তাঁদের সত্যি কিছু যায় আসে না, কাঞ্চনের অতীত কি ছিল। আমি ভাল থাকলেই তাঁরা খুশি। তাঁরা চান আমি এবং কাঞ্চন আনন্দে থাকি, ভাল থাকি। তবে হ্যাঁ, কাঞ্চনের একটি সন্তান রয়েছে, এ ব্যাপারে তো কারও কিছু করার নেই। সেই সন্তানের প্রতি আমার পরিবার সমব্যথী।”