দীর্ঘদিন সুরের সঙ্গে তাঁর সফরনামা, ভারতের সঙ্গীত জগতের ইতিহাসে এক স্বর্ণযুগ। যাঁর প্রতিটা গান সঙ্গীত জগতের সম্পদ। গোটা দেশ লতা মঙ্গেশকরকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছিল শোকে। মধুবালা থেকে শুরু করে করিনা কাপুর, যাঁর কণ্ঠের জাদু পেরিয়েছে যুগ, পেরিয়েছে প্রজন্ম। যে সকল অভিনেত্রীদের হয়ে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন, তাঁদের কাছে তা প্রাপ্তী হয়েই থেকে গিয়েছে। লতা মঙ্গেশকর এমন সময় গান শুরু করেছিলেন, যখন প্রযুক্তি এত উন্নত ছিল না। তাই গানের সঙ্গে তাঁর সফর, প্রতিটা পদে পদে এক অন্যসূত্রে গাঁথা।
যাঁরা তাঁকে কাছ থেকে পেয়েছেন, বারে বারে তাঁদের মুখে লতা মঙ্গেশকরের নানা জানা অজানা কথা উঠে আসতে দেখা যায়। কখনও আশা ভোঁসলে, কখনও আবার বিভিন্ন নায়িকাদের মুখে শোনা যায় নানা মজার মজার কাহিনিও। তেমনই এক অজানা তথ্য সকলের সঙ্গে শেয়ার করে নিয়েছিলেন গায়ক অমিত কুমার।
এক অনুষ্ঠানে এসে বলেছিলেন, “সাল ১৯৪৬-৪৮, ওই সময় সকলেই কঠিন পরিশ্রম করছিলেন। ট্রেনে বসেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। তিনি লক্ষ্য করেন তাঁরই সামনে একটা রোগা পাতলা যুবক বসে আছে। পরণে কুর্তা-পাজামা, হাতে লাঠি। বেশ ছটফট করছিলেন তিনি। সেখান থেকে ট্রেন বম্বে টকিজ পৌঁছল। সেখানে তিনি ট্রেন থেকে নেমে উঠে পড়েন টাঙ্গায়। সেখান থেকে বম্বে টকিজ় স্টুডিয়ো-তে তিনি যাচ্ছেন। এমন সময় তিনি লক্ষ্য করেন সেই যুবক তাঁর পিছু নিয়েছে। পিছনে একটা টাঙ্গায় বসে লতা মঙ্গেশকরকে ফলো করছে। স্টুডিয়োর ভিতরে পৌঁছতেই লতা মঙ্গেশকর জানান, ‘দেখুন কেউ একজন আমার পিছু নিয়েছে। কে জানে কে…।’ বলতে বলতে সেই যুবক ভেতরে ঢুকে পড়েন। লতা মঙ্গেশকর তাঁর দিকে দেখিয়ে বলেন এই সেই ব্যক্তি। তখন সামনের ব্যক্তি হাসতে শুরু করেন, বলেন, ‘ইনি তো অশোক কুমারের ভাই কিশোর কুমার। আপনার সঙ্গে গান গাইবেন আজ।’ এভাবেই বাবার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় লতা মঙ্গেশকরের।”