শিশু, বয়স্ক অনেকের দাঁতেই দেখা যায় ছোট ছোট কালো গর্ত। দাঁতের শক্ত জায়গায় ছোট গর্ত হয়, এগুলোকে ক্যাভিটি (Tooth Cavity) বলে। অনেকে একে দাঁতের পোকা বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু দাঁতে দৃশ্যমান কোনও পোকা থাকে না। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ডেন্টাল ক্যারিজ (Dental Caries) বা দাঁতের ক্ষয় রোগের জন্য দায়ী। সাধারণত যে কোনও ধরনের মিষ্টি খাবার, চিনিযুক্ত খাবার, চকলেট, চুইংগাম, ক্যান্ডি ইত্যাদি খাওয়ার পর মুখে এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি হয়, যা ধীরে ধীরে দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ ‘অ্যানামেল’ ক্ষয় করে থাকে। যারা এসব খাবার বেশি খায়, তাদের ক্ষেত্রে অ্যানামেল ক্ষয় হয়ে দাঁতে ছিদ্র বা গর্ত তৈরি হয়। দাঁতের মধ্যে গর্ত বা ক্যাভিটি (Tooth Decay) হলে তাতে ময়লা ও খাদ্য কণা জমে, ফলে সংক্রমণ হয়।
দাঁতের ক্যাভিটি নিয়ে ডেন্টিস্টিদের কাছে গেলে প্রথমেই তা ফিলিং করা পরামর্শ দেন। তবে ঘরেও এই সমস্যার প্রতিকার রয়েছে। ক্যাভিটি হচ্ছে বুঝতে পারলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসা শুরু করুন। ক্যাভিটি প্রাথমিক স্তরে থাকলে বাড়িতেই সারিয়ে তুলতে পারেন। ঘরোয়া উপায়ে ক্যাভিটি থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে, তা দেখে নিন একনজরে…
ডিমের খোসা- ডিমের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট। দাঁতের এনামেল পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি দাঁতের ক্যাভেটি দূর করতেও সহায়ক। ডিমের খোসা দাঁতকে অ্যাসিডিক পদার্থ থেকে রক্ষা করে। ডিমের খোসাগুলো একটি পাত্রে কয়েক মিনিট সিদ্ধ করুন, পুরোপুরি শুকাতে দিন। তারপর এর গুঁড়া তৈরি করুন। বেকিং সোডা যোগ করুন এবং উভয় উপাদান মিশিয়ে একটি পাউডার তৈরি করুন। আপনার দাঁত মালিশ করতে এই পাউডার ব্যবহার করুন।
হার্বল পাউডার– দাতের ক্য়াভিটির সঙ্গে সঙ্গে মাড়ির থেকে অনেক সময় রক্তপাত হতে দেখা যায়। তার জন্যও রয়েছে সহজ উপায়। বাড়িতেই ভেষজ পাউডার বানিয়ে দাঁত মাজলে ক্যাভিটি ও ব্যথা-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন দ্রুত। একটি বাটিতে ১ চা চামচ নিম পাতার গুঁড়ো, আধ চা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো, আধ চা চাম লবঙ্গ গুঁড়ো মিশিয়ে একটি হার্বল পাউডার তৈরি করুন। টুথপেস্ট নয়, রোজ এই গার্বল পাউডার দিয়ে দাঁত মাজলে উপকার পাবেন।
নারকেল তেল- বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ২০ মিনিটের জন্য মুখের চারপাশে এক টেবিল চামচ তিল বা নারকেল তেল নিয়ে কুলকুচি করুন, তারপরে থুতু ফেলে দিন। ক্যাভিটি হলে দাঁতে চরম ব্যথা দেখা যায়। সেই ব্যথা নিরাময়ের জন্য ব্যথার অংশে নারকেল তেল দেওয়া আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি। যার মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার এবং শক্তিশালী হতে সাহায্য করে। শুধু নারকেল তেলই নয়, আক্রান্ত স্থানে লবঙ্গের তেল দিনে ২-৩ বার লাগালে ব্যথা উপশম হয়। তেল গহ্বর প্রতিরোধে বিস্ময়কর কাজ করতে পারে কারণ লবঙ্গে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একটি তুলো সোয়াবে এক বা দুই ফোঁটা লবঙ্গ তেল যোগ করুন এবং গহ্বরে তেলটি লাগান। তেল ভিজিয়ে রাখলে ব্যথা উপশম হয়।