আয়রন হল শরীরের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা আমাদের বৃদ্ধি আর বিকাশের জন্য প্রয়োজন হয়। শরীরে আয়রনের পরিমাণ কম থাকলে সেখান থেকে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাধা পায়। এছাড়াও শরীরে আরও বেশ কিছু হরমোন তৈরির জন্যেও প্রয়োজন হয় হিমোগ্লোবিনের। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শরীর ঠিকমতো কাজ করে না। আর আয়রন কমে গেলে প্রয়োজনীয় রক্তকণিকাও তৈরি হয় না। এই অবস্থাকেই বলা হয় অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা।
আয়রনের ঘাটতি কেন হয়?
মেয়েদের মধ্যে বরাবরই আয়রনের পরিমাণ কম থাকে। এছাড়াও খাবারের মধ্যে যদি পর্যাপ্ত আয়রন না থাকে, যদি বেশ কিচুদিন ধরেই অ্যানিমিয়াতে ভোগোন, গর্ভাবস্থায় এবং যাঁরা কঠোর জিম করেন তাঁদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ শরীরে আয়রন শোষণের মত পরিস্থিতি থাকে না। তাই আয়রনের ঘাটতি পূরণ না হলে ক্লান্তি, শ্বাসকষ্টের মত একাধিক সমস্যা শরীরে লেগেই থাকে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীক্ষা ভাবসার আয়রনের ঘাটতি দূর করতে বেশ কিছু টিপস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে লিখেছেন, আয়রনের ঘাটতি হলেই চুল বেশি পড়ে। সেই সঙ্গে দেরিতে পিরিয়ড হওয়া, ঠিকমতো না হওয়া, রক্তপাত কম হওয়া, ক্লান্তি, দুর্বলতা এসব লেগেই থাকে। আর তাই আয়রনের ঘাটতি মেটাতে যে সব ঘরোয়া উপাদান আপনাকে সাহায্য করবে-
তিলের বীজ- আয়রনের সমস্যা রুখতে খুব ভাল হল তিলের বীজ। বিশেষত কালো তিল। কালো তিলের মধ্যে থাকে আয়রন, কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি ৬. ফোলেট, এবং ভিটামিন ই। এক চামচ কালো তিল শুকনো কড়াইতে নেড়ে নিন। এবার ওর সঙ্গে মধু আর ঘি মিশিয়ে লাড্ডুর মত পাকিয়ে খেয়ে নিন।
গমের শাক- এই শাকের মধ্যে থাকে বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন কে, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি। রয়েছে রক্ত তৈরির একাধিক উপাদানও। এই শাক হাতে ভাল করে পিষে নিয়ে রস বার করে খান। এক চামচ বা হাফ চামচ খেলেই যথেষ্ট।
খেজুর আর কিশমিশ- খেজুর আর কিশমিশের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ভিটামিন এ এবং সি। রোজ ব্রেকফাস্টের আগে ৩ টি খেজুর আর ৫ টি কিশমিশ খেতে পারেন। এছাড়াও খেজুর আর কিশমিশ আগের রাতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন খান। এতে শরীরের অনেক উপকার হয়।
বিট-গাজর- বিট আর গাজরও আয়রনের খুব ভাল উৎস। যদি অ্যানিমিয়ার সমস্যা থাকে তাহলে এই বিট আর গাজরের জুস বানিয়ে খান। অনেক উপকারিতা পাবেন। একটি ব্লেন্ডারের মধ্যে এক কাপ সিদ্ধ বিট আর গাজর দিন। এবার তা ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিয়ে লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন।
সজনে পাতা- সজনে পাতার একাধিক ওষুধি গুণ রয়েছে। সজনের প্রতিটা অংশই আমাদের শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। সজনের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন এ, সি এবং ম্যাগনেসিয়াম। রোজ সকালে এক চামচ সজনে পাঁতার গুঁড়ো খান। যাবতীয় সমস্যা থাকবে দূরে।