এই বছর বেশ জাঁকিয়ে শীত পড়েছে দেশ জুড়ে। কলকাতায় শীতের কাঁপুনি তেমন টের পাওয়া না গেলেও শহরতলীতে এখনও বেশ ঠান্ডা। সকালের ঠান্ডায় হৃদয় একরকম কম্পমান। এছাড়াও উত্তর ভারত জুড়ে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। উত্তর ভারতে আরও জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার পূর্বাভাসও রয়েছে। আর তাই শীতকালে ভাল করে খাওয়াদাওয়া এবং শারীরিক পরিশ্রম কিন্তু জরুরি। ঠান্ডার ভয়ে এক জায়কগায় জড়সর হয়ে বসে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে বই কী, কমবে না। শীতকালে ঘুম ঘুম ভাব ক্লান্তি খুবই সাধারণ ব্যাপার। এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যায়। যে কারণে হৃৎপিণ্ডকে পাম্প করতে বেশি কষ্ট করতে হয়। রক্তচাপ আর হৃদস্পন্দন বাড়লে রক্ত চলাচল কম হয়ে থাকে। আর তাই এমন সব খাবারই বেছে নিন যাতে শরীর স্বাভাবিক ভাবে উষ্ণ থাকে।
আর তাই পুষ্টিবিদ কিরণ কুকরেজা দিয়েছেন বিশেষ পরামর্শ। সম্প্রতি তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছেন। সেই পোস্টেই তিনি বিশেষ একটি রেসিপির কথা বলেছেন। নিয়ম মেনে এই চা খেতে পারলে শরীর থাকবে ভাল।
ঠান্ডায় শরীর গরম রাখতে আদা চায়ের কোনও তুলনা নেই। আদার মধ্যে রয়েছে থার্মোজেনিক প্রভাব, যা শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে। সেই সঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতেও সাহায্য করে। হলুদের মধ্যেও রয়েছে কারকিউমিন নামের একটি যৌগ, যা একাধিক সংক্রমণ থেকে আমাদের দূরে রাখে। দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, বমি বমি ভাব, কাশি, বুকে ব্যথা এসব কমাতে জুড়ি নেই আদা-হলুদ চায়ের। আদা, হলুদ থেঁতো করে দিয়ে ওর মধ্যে গোলমরিচের গুঁড়ো আর হাফ চামচ জোয়ান মিশিয়ে দিতে হবে। এবার তা ভাল করে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে খেয়ে নিন।
এছাড়াও গরং তেল মালিশ করতে পারেন। এতে শরীরে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। শীতের দিনে হাত, পা, পায়ের পাতা, পিঠ এই সব জায়গাতে বেশি ঠান্ডা লাগে। আর তাই এই অংশগুলিতেই আগে তেল মালিশ করে নিন।
রোজকার খাবারে বাজরা রাখুন। বাজরার মধ্যে থাকা স্টার্চ শরীরে শক্তি সরবরাহে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতেও উপকারী হল এই বাজরা। এতে রক্ত সঞ্চালন আর শরীরের তাপমাত্রাও ঠিক থাকে।
শীতে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সবুজ শাকসবজি অবশ্যই খাবেন। সবজির মধ্যে ক্যালোরি একেবারেই নেই। এছাড়াও থাকে প্রোটিন, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম। যা শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়।
শীতে সুস্থ থাকতে প্রাণায়ম আবশ্যক। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম নিয়মিত ভাবে করলে শরীরে তাপ উৎপন্ন হয়। অনুলোম বিলোম, কপালভাতি, উজ্জয়ী প্রাণায়াম রোজ করুন। মটিতে বসে মাদুর পেতে আসন করতে পারলে সবচাইতে ভাল। প্রয়োজনে খাটেও করতে পারেন।