বাইরের দেশের অনেকেই বদনাম করেন ভারতীয় হেঁশেলের। কারণ ভাতীয় রান্নায় এতই মশলা ব্যবহার করা হয় যে তা শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। আবার অনেক জায়গায় এই ভারতীয় মশলা স্বাদ আর গন্ধের জন্যই বিখ্যাত। আলাদা করে রয়েছে মশলার বাজারও। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় এই মশলার। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে হার্ট, ক্যানসার থেকে শুরু করে গুরুতর রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে এই সব মশলা। প্রাচীন আয়ুর্বেদেও কদর রয়েছে এই মশলার। এমনকী বিশ্বের তাবড় বিশেষজ্ঞরাও তা স্বীকার করে নিয়েছেন। যে কারণে মশলা দেওয়া শুকনো খাবার এত জনপ্রিয় ভারতীয় নানা পদের মধ্যে।
মশলাদার খাবার আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। তবে তা পরিমাণে খেতে হবে। খুব বেশি মোটেই চলবে না। এতে শরীরের ক্ষতি হয়। তেমনই মশলা একাধিক রোগ নিরাময়েও সাহায্য করে। অধিকাংশ রান্নায় ব্যবহার করা হয় দারুচিনি, হলুদ, আদা, রসুন, জিরা, গোলমরিচ। এই সব মশলা যেমন খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয় তেমনই এর নানা উপকারিতাও কিন্তু রয়েছে।
মশলাদার খাবার আয়ু বাড়ায়
হার্ভার্ড এবং চায়না ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের ২০১৫ সালের সমীক্ষা অনুসারে, সারা বছর মশলাদার খাবার খেতে পারলে একাধিক সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। তাই বলে রোজ প্রচুর তেল মশলায় কষানো মাংস, ডিম, মাছ, বিরিয়ানি এসব খেলে কিন্তু চলবে না। সপ্তাহে ৬ দিন পরিমিত মশলা দেওয়া খাবার খান। মশলাদার খাবারে মৃত্যুর হার কমতে পারে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত।
বাড়ে মেটাবলিজম
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত ভাবে মশলাদার খাবার খেতে পারলে মেটাবলিজমও বাড়ে। জিরে, দারচিনি, হলুদ, গোলমরিচ, আদা আমাদের বিপাক ক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। অর্থাৎ শরীর যখন বিশ্রামে থাকে তখন এই মশলার জেরেই আমাদের শরীরের ক্যালোরি পোড়ে। ফলে খিদে কম পায়। শরীরে যত কম খাবার যাবে ততই বেশি কিন্তু ফ্যাট গলবে।
প্রদাহ কমায়
মশলা আমাদের প্রদাহ জনিত সমস্যা থেকেও দূরে রাখে। যেমন হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন। যা শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ কমায়। আদা, রসুনের মধ্যেও রয়েছে একাধিক প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য। যে কারণে কয়েক শতাব্দী ধরে আর্থ্রাইটিস, অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, মাথা ব্যথা, বমি ভাব, খিদেমন্দা এড়াতে ব্যবহার করা হচ্ছে এই সব মশলা। এর এই সব মশলার গুণাগুণ যে কতখানি তার প্রমাণ রয়েছে বিজ্ঞানেও।
ক্যানসার ঠেকায়
গোলমরিচের মধ্যে রয়েছে ক্যাপসাইসিন, যা ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এমনকী প্রোস্টেট ক্যানসার রুখতেও কার্যকরী এই সব মশলা। এছাড়াও মশলা যে কোনও খাবারকে ভেঙে হজমের উপযোগী করে তোলে। সেই সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ, কোলেস্টেরল, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের মত রোগের ঝুঁকি কমায়। হার্ট অ্যার্টাক, স্ট্রোক এসব থেকেও রাখে দূরে। জিরা আর হলুদের মধ্যে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা আমাদের শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।