ব্রেড আর আলুর চিপস কে সোনালী হলুদ রং পর্যন্তই তেলে ভাজুন। এদের রঙ যদি ব্রাউন হয় তাহলেই বিপদ। কারণ, তখন সেখান থেকে অতিরিক্ত কেমিক্যাল বেরিয়ে শরীরে ক্যানসার ঘটাতে পারে। এমনই জানালেন খাদ্য বিজ্ঞানীরা।
কী এই কেমিক্যাল?
এর নাম অ্যাক্রিলেমাইড। অনেক রকমের খাদ্যদ্রব্যেই এই কেমিক্যাল থাকে। রান্না করলে সেই সব খাদ্য বস্তু থেকে আরও বেশি পরিমানে এই কেমিক্যাল নির্গত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি পরিমানে এই কেমিক্যাল থাকে শর্করা জাতীয় খাদ্যে। যেমন চিপস‚ ব্রেড‚ সিরিয়াল‚ বিস্কুট‚ ক্র্যাকারস‚ কেক এবং কফিতে। এই খাবারগুলোকে যদি ১২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে গরম করা হয় তবে অ্যাক্রিলেমাইডের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে যায়।
উদাহরণ হিসেবে ধরে নিন আপনি ব্রেড গ্রিল করে রোস্ট করছেন। প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাক্রিলেমাইড তৈরী হওয়া শুরু হয়ে যায়। এবার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যত বেশি ব্রাউন হয়, তত বেশি অ্যাক্রিলেমাইড তৈরি হয়। ব্রাউনিং প্রসেসের সময় ব্রেডের মধ্যে থাকা চিনি‚ অ্যামিনো অ্যাাসিড আর জল মিলেই এই ব্রাউন রঙ আর অ্যাক্রিলেমাইড তৈরি হয়।
অ্যাক্রিলেমাইড বিপজ্জনক কেন?
জন্তুদের উপর গবেষণা করে দেখা গিয়েছে এই কেমিক্যাল DNA-এর উপর বিষক্রিয়া করে এবং ক্যানসার সেল তৈরি করে। স্নায়ুতন্ত্র এবং জনন সক্ষমতার উপরেও আঘাত হানে এই কেমিক্যাল।
তবে ঠিক কতখানি অ্যাক্রিলেমাইড মানুষের জন্য বিপজ্জনক তা সঠিক ভাবে জানা যায় নি। যারা ধূমপান করেন তাঁরা, যারা ধুমপান করেন না তাঁদের থেকে ৩-৪ গুণ বেশী অ্যাক্রিলেমাইড নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে নিয়ে থাকেন। কারণ তামাকের ধোঁয়ার অনেক বেশি মাত্রায় অ্যাক্রিলেমাইড থাকে।
যদিও কেউ কেউ বলছেন এতে ভয়ের কিছু নেই। আমাদের শরীরের একটা হিসেবের ভিত্তিতেই এমনটা বলা হচ্ছে। যারা সবচেয়ে বেশি অ্যাক্রিলেমাইড গ্রহণ করছেন, সেই পরিমাণের চেয়েও ১৬০ গুণ বেশী অ্যাক্রিলেমাইড আমাদের শরীরে কোনওকম ক্ষতি করতে পারে না।
কিন্তু খাদ্যবিজ্ঞানীরা একমত নন। তাঁদের মতে‚ আমাদের অ্যাক্রিলেমাইড গ্রহণের পরিমাণ উদ্বেগজনক ভাবে বেশি।
কমানোর উপায় কী?
১) টোস্ট বেক বা ফ্রাই করার সময় ব্রাউন করে ফেলবেন না‚ সোনালী হলুদ পর্যন্তই গরম করুন।
২) কাঁচা আলু ফ্রিজে রাখবেন না। ঠান্ডায় অ্যাক্রিলেমাইড বেশি পরিমাণে বের হয়। অন্ধকার জায়গায় ৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরের তাপমাত্রায় রাখুন।
৩) ব্যালান্সড ডায়েট করুন। শুধুই কার্বোহাইড্রেটে তালিকা ভরিয়ে দেবেন না। ফল খান‚ শাক সবজি খান।
আরও পড়ুন: Breast Cancer: জীবনধারায় ছোট্ট পরিবর্তন গুলিই আপনাকে স্তন ক্যান্সারের হাত থেকে দূরে রাখতে পারে
আরও পড়ুন: Insomnia Prevention: অনিদ্রায় ভুগছেন? এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো মেনে চললেই নিরাময় পাবেন…