ডায়েবেটিসকে (Diabetes) এখন একবিংশ শতাব্দীর প্লেগ বলা হচ্ছে। সমীক্ষা (Report) বলছে, দেশে প্রতি ১০ জনের একজন এখন ডায়েবেটিসে আক্রান্ত। আগে নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর ডায়েবেটিস শরীরে বাসা বাঁধত। এখন আর তা বয়সের তোয়াক্কা করে না। ডায়েবেটিস এখন ঘরে ঘরে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন,অনিয়ম, শরীরচর্চার অভাবে মূলত এই রোগ হয়। কর্মব্যস্ত জীবনে শরীরচর্চায় ইতি ঘটেছে- ফলে শরীরে বাসা বাঁধছে এই রোগ। রক্তে সুগারের (Blood Sugar) পরিমান বেড়ে গেলে ডায়েবেটিস হয়।
আমাদের শরীরের মূল জ্বালানি হল গ্লুকোজ, যার উৎস শর্করা। শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার পর হজম শেষে ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে গ্লুকেজ রক্তে প্রবেশ করে, যা ইনসুলিনের সাহায্যে রক্ত থেকে কোষে যায় এবং বিপাকক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শক্তি উৎপন্ন করে। কিন্তু কোনও কারণে গ্লুকোজ রক্ত থেকে কোষের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারলে তা রক্তে জমা হতে থাকে। ফলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমান বেড়ে যায়। ডায়েবেটিসকে নির্মূল করা সম্ভব নয় তবে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই পাতে রাখতে হবে এমন কিছু খাবার যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কম ক্যালোরির খাবার খেতে হবে, আলু, চিনি আর শর্করা আজ থেকেই ছেড়ে দিন। এছাড়াও রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে কাজে আসে এই ফুলের গাছও।
গ্রাম বাংলার বাড়ির উঠোনে আজও আগাছার মত জন্মায় নয়নতারা। শুধু গ্রামে নয়, শহরাঞ্চলের অনেক বাড়িতেও এই গাছ রয়েছে। নয়নতারা ফুল দেখতে যেমন ভাল লাগে তেমনই এর একাধিক উপকারিতাও রয়েছে। ডায়াবেটিস, ক্যানসারের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধও তৈরি হয় এই নয়নতারা থেকেই। সেই সঙ্গে নয়নতারা গাছের পাতার রসে এমন উপাদান থাকে যা রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদে ব্যবহার হয়ে আসছে এই গাছের ফুল আর পাতা। যে কারণে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই গাছকে একরকম ধন্বন্তরি মনে করা হয়।
তবে জীবনযাত্রায় রাশ টানলে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। সকলেরই উচিত বছরে অন্তত দুবার রক্ত পরীক্ষা করানো। যদি তাতে সুগারের মাত্রা বেশি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। প্রয়োজনে ওষুধ খান। পাশাপাশি সুস্থ জীবনযাপন করুন। সময়ে ঘুমোতে যান, প্রক্রিয়াজাত, প্যাকেটজাত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। তেল, মশলা কম খান, মিষ্টি জীবন থেকে বাদ দিন সেই সঙ্গে রোজ ৩০ মিনিট শরীরচর্চা আবশ্যক। তবেই সুস্থ থাকবেন।
প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় চিরসবুজ উদ্ভিদের ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে। সুগার নিয়ন্ত্রণে এইসব গাছ সত্যিই ধন্বন্তরি। সমীক্ষা বলছে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে ডায়েবেটিসকে ৭০ শতাংশ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। যদি আপনি ডায়েবেটিক হন তবে অবশ্যই সুস্থ জীবনযাপন করতে হবে আপনাকে। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমান, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার ছোঁবেন না। তৈলাক্ত ও চর্বি যুক্ত খাবার একেবারে বর্জন করুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন সুস্থ থাকবেন এবং আপনার ডায়েবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।