নতুন বছরের শুরু থেকেই ঠান্ডা অনুভব করছে বঙ্গবাসী। উইকএন্ডেও বেশ কিছুটা কমেছে তাপমাত্রা। ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পারদ ছুঁয়ে ফেলেছে। বেশ কয়েক বছর পর এমন ঠান্ডা অনুভব করছে বাঙালি। কিন্তু শীতে সঙ্গে মাথাচাড়া দিচ্ছে রোগ। কোভিডে আক্রান্তে হওয়ার পর থেকে মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কিছুটা কমেছে। আর যাঁরা এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি, তাঁদেরও যে ইমিউনিটি খুব বেশি, তা কিন্তু নয়। ফলে এখন সামান্য আবহাওয়া পরিবর্তনেই সংক্রমণ ও রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে, শীতের ফলের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এর সমাধান। এই সময় বাজারে সহজেই আমলকি পাওয়া যায়। এটি হল সুপারফুড।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় যুগ যুগ ধরে আমলকি ব্যবহার করা হচ্ছে। গবেষণা বলছে, ১০০ গ্রাম তাজা আমলকির মধ্যে ২০টির কমলালেবুর সমান ভিটামিন সি রয়েছে। পাশাপাশি এই ফলে ক্যালোরি, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিন, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন ও বিভিন্ন ভিটামিন রয়েছে। শীতে রোজ একটা করে কাঁচা আমলকি খেলে আপনি অনেক রোগের হাত থেকেই দূরে থাকতে পারবেন।
আমলকির মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরির মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এতে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। রোজ আমলকি খেলে এটি আপনার শরীরে ক্যানসারের কোষকে বৃদ্ধি হতে দেবে না।
আমলকির মধ্যে দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে যা শরীরে দ্রুত দ্রবীভূত হয় এবং শর্করা শোষণের হার কমিয়ে দেয়। অর্থাৎ, এটি রক্তে চট করে সুগার লেভেল বাড়িয়ে দেয় না। সুতরাং, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা সহজেই আমলকি খেতে পারেন। তাছাড়া এই ফাইবার কোলেস্টেরল রোগীদের জন্য উপযুক্ত। লিপিড প্রোফাইল ঠিক রাখলে আমলকি খাওয়া উচিত। আমলকির মধ্যে থাকা ওই ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপরও ভাল প্রভাব ফেলে। এটি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের উপসর্গ দূর করে। এতে বদহজম, গ্যাস, পেটের আলসারের সমস্যাও দূরে থাকে।
আমলকির মধ্যে ভিটামিন এ রয়েছে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন এ শুধুমাত্র দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে না, এটি বয়সজনিত চোখের রোগের ঝুঁকিও কমাতে পারে। অন্যদিকে, আমলকির মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে কনজেক্টিভাইটিসের মতো সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
শীতের দূষণ আমাদের শ্বাসযন্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আপনি আমলকি খেতে পারেন। আমলকির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য ফুসফুসকে বাহ্যিক দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এতে কাশি, সর্দি ও কফের মতো সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।