কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিচরণ সর্বক্ষেত্রে। বিচারশালা, শিক্ষাক্ষেত্র, সরকারি দফতর পরিচালনা, থেকে চিকিতৎসাশাস্ত্র, সবেতেই এখম গুরুত্বপূর্ণ এআই। বিশেষ করে হাঁটুতে নিখুঁত অস্ত্রপাচার থেকে শুরু করে ক্যানসার চিকিৎসায় দ্রুত রোগ মুক্তির আশা দেখাচ্ছে প্রযুক্তি। কিছুদিন আগেই একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে এআই ব্যবহার করে স্তন ক্যানসার হওয়ার ৫ বছর আগেই জানা যাবে কারও সেই রোগে আক্রান্ত সম্ভাবনা আছে কিনা?
এইবার আরও এক যুগান্তকারী গবেষণার কথা উঠে এল সবার সামনে। যার ফলে নতুন মাত্রা পাবে চিকিৎসাশাস্ত্র। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা বলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে দশ বছর আগেই জানা সম্ভব কেউ হৃদ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন কি না!
‘ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রের দাবি এআই পরিচালিত এই যন্ত্র হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারবে। এই গবেষণাটি করতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ হৃদরোগীর উপরে একটি পরীক্ষা করে গবেষকেরা। বুকে মাঝেমধ্যেই ব্যথা হয়, সিটি স্ক্যান করিয়েছেন, এমন রোগীদেরই বেছে নেওয়া হয়েছে যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য। তাতে ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।
কী ভাবে কাজ করবে এই যন্ত্র? অক্সফোর্ডের গবেষকেরা বলছেন, এআই পরিচালিত ওই যন্ত্র ‘স্ক্যান’ করে বলে দিতে পারবে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে হার্টের অবস্থা কেমন থাকবে। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা আছে কি না। এই যন্ত্রের কার্যকারিতা এখনও পরীক্ষানিরীক্ষার স্তরেই আছে। বিভিন্ন রোগীর উপরে পরীক্ষা করে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন গবেষকেরা।
দিব্যি সুস্থ মানুষ, কিন্তু হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা, দরদর করে ঘাম, তার পরেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে সব শেষ। সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনার নজির কম নয়। সময় থাকতে পরীক্ষা করান না বেশির ভাগ মানুষই, তাই হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, তা বোঝাও যায় না। হার্ট অ্যাটাক যে কোনও বয়সে, যে কোনও সময়ে হতে পারে। ইদানীং কালে ‘সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক’-এর শিকারও হচ্ছেন অনেকে। এ ক্ষেত্রে আগে থেকে উপসর্গ ধরা পড়ে না, আচমকাই ঘটে যায়। রোগীকে বাঁচানোর সময়টুকুও পাওয়া যায় না।
ব্যস্ত জীবনযাপনে অতিরিক্ত মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, শরীরচর্চা না করা, তার উপরে নেশার প্রকোপ হৃদ্রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বা ডায়াবিটিসের রোগী কিংবা যাঁদের স্থূলতার সমস্যা রয়েছে, তাঁদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। এর পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাভুজি, বাইরের তেল-মশলাদার খাবার বেশি খাওয়ার অভ্যাসও কিন্তু হার্টের অসুখের দিকে আমাদের ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।
হার্ট অ্যাটাক হলে বুকের মাঝখানে বা বাঁ দিকে অস্বস্তি হয়, যা কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়। সেই সঙ্গেই দরদর করে ঘাম হতে পারে। এসি ঘরে বসেও ঘাম হয়। শ্বাস নিতে সমস্যা বা দম বন্ধ হয়ে আসা এরই লক্ষণ। এমন অনুভূতি হলে অবশ্যই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ফেলে রাখার ভুল করবেন না।