সুইসাইড ডিজিজ। নাম শুনলে মনে হতে পারে এটা হয়তো কোনও মানসিক রোগ। মানসিক অবসাদের ফলে বারবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা গোছের কিছু। তবে বিষয়টা কিন্তু মোটে তেমন নয়। বরং এই রোগের সঙ্গে মনের খুব একটা যোগ নেই। বিষয়টা একটা দৈহিক রোগ।
এই রোগে আক্রান্ত হলে মুখের এক পাশে শুরু হয় তীব্র ব্যথা। যা কখনও কখনও রীতিমতো অসহনীয় হয়ে ওঠে। এমনকি কথা বলা, হাসা, খাবার বা জল খাওয়াটাও হয়ে ওঠে অসহনীয়। মুখে জলের ঝাপটা দেওয়া, শেভ করা, দাঁত ব্রাশ করার সময় হয় ব্যথা। মোট কথা ব্যথায় ব্যথায় অস্থির হয়ে ওঠে জীবন।
রোজকার স্বাভাবিক কাজের সময়ই ব্যথা শুরু হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথার ধরন ভীষণ কষ্টদায়ক বলে কেউ কেউ একে সুইসাইড ডিজিজ বলে থাকেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া’।
কী হয় এই রোগের প্রভাবে?
মুখের স্বাভাবিকতার জন্য যেসব স্নায়ু কাজ করে, তারই একটি হলো ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু। কোনও কারণে এই স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। হয়তো একটি ধমনি ওই স্নায়ুকে বেশ চেপে রইল। সেই চাপের কারণেই তীব্র ব্যথা অনুভব করেন রোগী। কোনও টিউমার যদি স্নায়ুটিকে চাপ দেয়, তাহলেও এমনটা হতে পারে। অন্যান্য কিছু স্নায়বিক রোগেও এমন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
কেন এই স্নায়ুর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট কোনও জীবনপদ্ধতি এর জন্য দায়ী নয়। যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।
কী করবেন?
ঘরোয়া চিকিৎসায় এই ব্যথা সারার নয়। এর জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের ওষুধ। জীবনধারায় কোনও পরিবর্তন এনে রোগের তীব্রতা কমানো সম্ভব হয় না। সুস্থ থাকতে তাই ওষুধ সেবন ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। মনে রাখবেন এটা একধরনের স্নায়ু জনিত রোগ। তাই ফেলে না রেখে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।