মঙ্গলবার রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা প্রথম বারের জন্য ৯০০ পেরিয়ে গেল। গতকাল রাজ্যে মোট ৯৬৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এ বছর এর আগে এত সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হননি। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের কোন জেলায় বা কোন ব্লক ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি তার দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে সবার প্রথমেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। যদিও কলকাতার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছে পুরসভা।
সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। তথ্য বলছে, ২০১৯ বাদ দিলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এ বছর সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তা-ই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উত্তর ২৪ পরগনার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং দার্জিলিঙে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ৬০৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী এখও পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন।
এই সাত জেলার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে শীর্ষেই রয়েছে সল্টলেক। রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত শুধু বিধাননগর এলাকাতে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৫৭১ জন। তার মধ্যে ৬১% সল্টলেকের ও ৩৯% রাজারহাট ও গোপালপুরের বাসিন্দা। বাগজোলা, কেষ্টপুর এবং ইষ্টার্ন ড্রেনেজ খাল সংলগ্ন এলাকায় বেড়ে চলেছে ডেঙ্গির মশা। খালে নিয়মিত জঞ্জাল, আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সল্টলেকের পার্কের ফোয়ারার জমা জলে বেড়ে উঠেছে মশার লার্ভা। পাশাপাশি চারিদিকে পড়ে রয়েছে ডাবের খোলা, চায়ের ভাড় ও পরিত্যক্ত টায়ার।
এই সাত জেলায় যে হারে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। কলকাতা পুরসভার অধীনে ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চালু হয়েছে ২৪ ঘণ্টা রক্ত পরীক্ষার কেন্দ্র, ফিভার ক্যাম্প। এমনকী শহরের ২৫টি ডেঙ্গিপ্রবণ ব্লকে ড্রোন উড়িয়ে খোঁজা হচ্ছে মশার আঁতুড়ঘর। গত সোমবার ড্রোন উড়তে চোখে পড়ে টালিনালার দু’পাশে ছোট ছোট গর্তে জমা জলে বেড়ে চলেছে মশার লার্ভা। রাত পোহাতেই মঙ্গলবার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছুঁইছুঁই।
বুধবারও যে অবস্থার উন্নতি হয়েছে তা কিন্তু নয়। বরং আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে প্লেটলেট কমে মারা যান ৬১ বছর বয়সি এক প্রৌঢ়। মৃত প্রৌঢ়ের নাম সুব্রত সরকার। কলকাতা পুরনিগমের ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশদ্রোনীতে নিউ গভর্নমেন্ট কলোনি বাড়ি ওই প্রৌঢ়ের।