প্রতি বছর ২৬ নভেম্বর পালিত হয় অ্যান্টি-ওবেসিটি দিবস। স্থূলতা এবং স্থূলতার কারণে যে শারীরিক রোগের ঝুঁকি বাড়ে তা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই এই দিনটি পালন করা হয়। অনিয়মিত লাইফস্টাইলের কারণে দিন দিন বেড়ে চলেছে ওবেসিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা। স্থূলতা হল এমন একটি অবস্থা যেখানে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ওজন বাড়তে থাকে। এর পাশাপাশি শরীরে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, মানসিক চাপ এবং শরীরচর্চার অভাব ওবেসিটির ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। শরীরের বিভিন্ন অংশে যখন চর্বি জমতে থাকে তখনই ওজন বাড়ে এবং ওবেসিটির মতো অবস্থা দেখা দেয়। অনেক সময় কোনও রোগের কারণেও ওবেসিটির সমস্যা দেখা দেয়। আবার ওবেসিটির কারণেও শারীরিক রোগ দেখা দেয়। ওবেসিটির কারণে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বাড়ে, দেখে নিন…
বিপাক ক্রিয়া পরিবর্তন হয়ে যায়- বিপাক ক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যালোরি শক্তিতে রুপান্তরিত হয়। শরীরে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বিপাকীয় হারের উপর প্রভাব পড়ে। বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এতে হজমের সমস্যা দেখা দেয়, শরীরে ক্লান্তি দেখা দেয়। এই মেটাবলিক সিনড্রোম স্থূলতার একটি সাধারণ কারণ। সময় থাকতে এই অবস্থার যত্ন না নিলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস- স্থূলতার কারণে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। স্থূলতা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় সাত গুণ বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমিয়ে, সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য খেয়ে এই অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানো যায়।
হৃদরোগ- স্থূলতার সম্পর্কে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, রক্তে উচ্চ শর্করার মাত্রা এবং শারীরিক প্রদাহ বৃদ্ধি পায়। আর এই সমস্ত শারীরিক অবস্থা হার্টের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এখান থেকে করোনারি আর্টারি ডিজিজ, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। আপনি যদি হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে চান তাহলে ওজনকে বশে রাখতে হবে।
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ- অতিরিক্ত চর্বি লিভারে জমতে শুরু করে। এটি লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এর ফলে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ দেখা যায়। সময়মতো এই অবস্থার চিকিৎসা না করালে হেপাটাইটিস এবং সিরোসিসের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে।
পিত্তথলিতে পাথর- কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ১০-২০ শতাংশ মানুষ আজ এই রোগে ভুগছে। যখন অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এনজাইম পিত্তথলিতে উপস্থিত পিত্তে দ্রবীভূত হতে পারে না, তখন তা ধীরে ধীরে জমা হতে শুরু করে। এটাই শক্ত হয়ে পাথরের আকার ধারণ করে।
ক্যানসার- ক্যানসারের পিছনে ঠিক কোন কারণ দায়ী তা এখনও অজানা। তবে বিশেষজ্ঞেরা বেশ কিছু কারণকে দায়ী করে ক্যানসারের জন্য। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জরায়ু, ডিম্বাশয়, স্তন ক্যানসার, গলব্লাডার ক্যানসার, প্রোস্টেট ক্যানসারের মতো রোগের পিছনে কিছু অংশে স্থূলতা দায়ী।