অনেকেরই পায়ের শিরা দেখা যায়। কিছু সময় তাতে অন্যদের তুলনায় অধিক ফোলাভাবও থাকে। ফুলে গেলে পায়ের শিরা নীল দেখায়। কেউ ভাবেন বোধহয় ফর্সা ত্বকের জন্য এমন হচ্ছে। পায়ের এই ফুলপে থাকা শিরাগুলোকে ভেরিকোজ শিরা বলা হয়। ছোটবেলায় এই শিরা থেকে তেমন সমস্যা হয় না। তবে বড় বয়সে হতে পারে। তাই শিরায় এই নীলচে ভাব উপেক্ষা করা একেবারেই ঠিক নয়। ভেরিকোজ শিরা সাধারণত পায়ে থাকে। বিশেষ করে পায়ের আঙুলের চারপাশে বেশি দেখা যায়। পরবর্তীতে বাড়াবাড়ি হলে হাঁটু আর উরুতেও তা দৃশ্যমান থাকে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করলে এই শিরাতে বেশি চাপ পড়ে এবং তা বেশি করে দৃশ্যমান হয়। অনেক সময় এই ভেরিকোজ শিরা পেঁচিয়ে যায়। তখন আরও বেশি কষ্ট হয়। আর তাই আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ রেখা রাধামনি দিচ্ছেন বিশেষ পরামর্শ।
এই ভেরিকোজ শিরা মূলত পায়েই দেখা যায়। পায়ের আঙুলের চারপাশে আর হাঁটু, উরুতে বেশি দেখা যায়। যাদের পায়ে বেশি চাপ পড়ে তাদের ক্ষেত্রে এই শিরা থেকে সমস্যা বেশি হয়। ভেরিকোজ শিরাগুলি সাধারণ শিরার তুলনায় প্যাঁচানো আর বড় হয়। ফলে তা পায়ের উপরেই সবচেয়ে বেশি চাপ ফেলে।
আপনার পায়েও কি আছে এমন ভেরিকোজ ভেন?
ভেরিকোজ শিরা বুঝতে পারবেন পায়ের দিকে তাকালেই। ওই শিরা সব সময় ফলে থাকে আর স্পষ্ট থাকে। যদি পায়ে গাঢ় নীল রঙের শিরা দেখতে পান তাহলে ওটাই ভেরিকোজ শিরা। এই শিরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোটা হয়। আর তাই আগে থেকেই যত্ন নিতে হবে।
ভেরিকোজ শিরার লক্ষণ
একটানা দাঁড়িয়ে থাকলে পা ব্যথা করবেই। তবে তা যদি হয় ভেরিকোজ শিরা তাহলে পা একটু বেশিই ব্যথা করে। সোই সঙ্গে জ্বালাপোড়া একটা অনুভূতিও থাকে। এই শিরা ফুলে থাকার পাশাপাশি পরবর্তীতে রঙেও আসে পরিবর্তন। পুরু এবং নীল হয়ে যায়। ভেরিকোজ শিরা মূলত মহিলাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায়। অনেক মহিলার গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা বেশি হয়। কারণ ওজন বেড়ে যাওয়ায় এই শিরাগুলি ফুলে ওঠে। এমনকী বয়সকালেও হতে পারে এই সমস্যা। যাদের ওজন বেশি, ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু হতে পারে এই সমস্যা।
তা ই যা কিছু মেনে চলবেন
একটানা কোথাও দাঁড়িয়ে থাকবেন না। এতে সমস্যা বেশি হয়। বা ঝুলিয়ে বেশিক্ষণ বসে থাকাও ক্ষতিকর। তাই মাঝেমধ্যেই হাঁটাচলা করুন। মাঝে একটু বসুন। এভাবেই চলতে পারলে আরাম পাবেন।
পা উঁচু করে রাখলে রক্তচলাচল ঠিকমতো হয়। যখন কোথাও বসবেন তখন পা সোজা করে রাখুন। এরজন্য একটি স্ট্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন। ঘুমনোর সময় বিছানার পাশে উঁচু টুল রাখুন। যেখানে পা রাখতে পারেন। খুব নীচু খাটে ঘুমোবেন না। খাট উঁচু করে রাখুন। প্রয়োজনে ইঁট দিয়ে উঁচু করুন। প্রয়োজনে বালিশ দিয়ে উঁচু করে সেখানেও পা রাখতে পারেন। এতে হার্টের রক্তচলাচলও ভাল থাকে।
এই শিরার সমস্যা থাকলে নিয়ম করে যোগাসন করুন। শীর্ষাসন, সর্বাঙ্গাসন, নৌকাসন এসব খুবই উপকারী। সেই সঙ্গে রোজ শরীরচর্চা করতেও কিন্তু ভুলবেন না। ওয়ার্কআউট রোজ করতে পারলে ভাল। তবে ওজন তোলা বা খুব ভারী কিছু করবেন না।
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি তেল ব্যবহার করতে পারেন। ম্যাসাজ করার সময় খুব বেশি চাপ দেবেন না। পায়ের আঙুল থেকে পাতা পর্যন্ত সুন্দর করে ম্যাসাজ করুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ম্যাসাজ করুন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।