আজকাল অধিকাংশই চশমা ছাড়া সংবাদপত্র পড়তে পারেন না। কিছুসময় পেপার কিংবা বইয়ের লেখার দিকে তাকিয়ে থাকলেই মনে হয় চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। চোখ দিয়ে জল পড়ছে। যাঁরা দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপে কাজ করেন তাঁদের ক্ষেত্রেও রয়েছে এই একই সমস্যা। একটানা নীলচে আলোর দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ব্যথা, চোখ দিয়ে জল পড়া এসব হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ চোখের উপর চাপ পড়ে। এই চোখে ব্যথা, একটানা চোখ দিয়ে জল পড়া, চোখ চুলকুনোর মত সমস্যা এসব দীর্ঘদিন ফেলে রাকা ঠিক নয়। এখান থেকে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। চিরতরে অন্ধও হয়ে যেতে পারেন। আর তাই আয়ুর্বেদ দিচ্ছে বিশেষ পরামর্শ।
আজকাল স্কুলপড়ুয়া প্রায় সব বাচ্চাদেরই চোখে চশমা। এর অন্যতম কারণ হল সারাদিন মোবাইল অথব কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, গেম খেলা এবং খাদ্যাভ্যাস। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই থেকে যায় পুষ্টির ঘাটতি। কেননা কেউই শাক, সবজি, ফল এসব বিশেষ খেতে চায় না। সঙ্গে আছে ওবেসিটির মত সমস্যাও। কোভিড পরবর্তী কালে জীবন আরও অনেক বেশি গ্যাজেট নির্ভর হয়েছে। আর তাই সমস্যাও বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রায়শই চোখ দিয়ে জল পড়ছে, আঞ্জনির সমস্যা হচ্ছে, মনে হচ্ছে যে চোখে কাঁটার মত কিছু বিঁধছে তাহলে আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ঐশ্বরিয়া সন্তোষ তাই সম্প্রতি চোখের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপায়ের কথা বলেছেন। যে কারণে তিনি এই ৬ খাবার রাখতে বলছেন রোজকার খাদ্যতালিকায়-
খনিজ লবণ- চোখের জন্য় খুব ভাল হল রক সল্ট। এই রকসল্ট চোখের জন্য খুব ভাল। সাধারণ নুনের পরিবর্তে তাই ব্যবহার করুন এই নুন।
ত্রিফলা- ত্রিফলা যেমন পেটের সমস্যায় খুব ভাল কাজ করে তেমনই চোখের ওষুধ হিসেবেও কিন্তু বেশ কার্যকরী। ত্রিফলার গুঁড়ো এক চামচ নিয়ে ওর সঙ্গে মধু আর ঘি মিশিয়ে খেতে পারলে ভাল কাজ হয়। তবে এই মিশ্রণ রোজ খাবেন না। সপ্তাহে ২ দিন রাতে খেলেই হবে।
আমলা- কনজাংটিভাইটিসের সমস্যায় খুব ভাল কাজ করে আমলা। আমলা গ্লুকোমা উপশম করতেও সাহায্য করে। আমলার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। এই ভিটামিন সি রেটিনাল কোষগুলিকে ভাল রাখে। যাঁদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রয়েছে তাঁদের জন্য খুবই ভাল আমলা। তাই রোজ খেতে পারেন আমলার রস।
কিশমিশ- কিশমিশের মধ্যে থাকে পলিফেনল ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা চোখের পেশীগুলি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
মধু- চোখের সমস্যা থাকলে রোজ মধু খেতে বলেন চিকিৎসকেরা। মধু দিয়ে চা খেতে পারেন। জলের সঙ্গে মধু বা গরম দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
ঘি- ঘি-এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। ভিটামিন এ -এর ঘাটতি হলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হয়। ঘি রোজ খেলে দৃষ্টিশক্তির কোনও রকম সমস্যা হয় না। শরীরও থাকে ভাল। আয়ুর্বেদে ঘি-এর অনেক রকম ব্যবহার রয়েছে। এখনও চোখের ওষুধ তৈরিতে ঘি ব্যবহার করা হয়।