একটানা একজায়গায় বসে কাজ করলে কোমরব্যথা হবেই। তা সে অফিস হোক কিংবা বাড়ির কম্পিউটার। আজকাল অনলাইন ক্লাসের দৌলতে খুদেরাও বসে থাকে ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল হাতে। কিছু মানুষ এমনো আছেন যাঁদের একটানা দাঁড়িয়ে থেকেই কাজ করতে হয়। কোনও ভাবে বসে পড়লেই হাঁটুতে বা কোমরে যন্ত্রণা হতে শুরু করে। আগে বলা হত বয়স ৪০ পেরোলে তবেই হাঁটু-কেমরের ব্যথা বাড়ে। কিন্তু এখন খুব অল্প বয়স থেকেই দেখা দিচ্ছে এই সমস্যা। তবে এই কোমর বা হাঁটু ব্যথার নেপথ্যে কিন্তু বেশ পুরনো কিছু রোগও থাকে। ধরা যাক, কোনও এক সময় সাইকেল চালাতে গিয়ে কিংবা সিঁড়ির থেকে পড়ে গিয়েছেন। তখন সেই ব্যথা হয়ত তেমন ভোগায়নি। ১০ বছর পর তা যে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না সে বিষয়ে কিন্তু কোনও নিশ্চয়তা নেই।
শিড়দাঁড়ায় চোট পেলে সেখান থেকেও কিন্তু কোমরে ব্যথা হতে পারে। অধিকাংশ মায়েরই অভিযোগ সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকে তাঁর কোমরে ব্যথার সমস্যা এসেছে। তবে ওবেসিটি বা অতিরিক্ত ওজন বাড়লে সেখান থেকেও এই সমস্যা আসতে পারে।
নারী পুরুষ উভয়েই কোমরের ব্যথার সমস্যার ভোগেন। কিন্তু তুলনামূলক ভাবে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হয়। ডেলিভারির পর সম মেয়েরাই এই কোমরের ব্যথার কথা বলেন। প্রত্যেকেই বলেন সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। কিন্তু কেন হয় এই সমস্যা? বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলেছিলাম চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রেগন্যান্সির সময় কোমড়ের হাড় ওজনের কারণে পিছনের দিকে চলে যায়। কিন্তু গঠনগত দিক থেকে করোমরের হাড় সোজা থাকে। এই বেঁকে যাওয়ার কারণেই ডেলিভারির পর কোমরে ব্যথা হয়। এছাড়াও মেনোপজের পর কোমরে ব্যথা হয়। এক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যায়াম ভীষণ ভাবে জরুরি। কিডনি বা ইউটেরাসের কোনও সমস্যা হলে তার প্রাথমিক লক্ষণও কিন্তু কোমরে ব্যথা।
বসার দোষেও কিন্তু কোমরে ব্যথা হতে পারে। অনেকেই সামনের দিকে বেশি ঝুঁকে, খাটে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করেন। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকলে কোমরে সমস্যা হবেই। কোমরের উপর ক্রমাগত এই ভুল ভাবে চাপ পড়তে থাকলে মেরদণ্ডের দুই হাড়ের মাঝে বসে থাকা নরম কুশন বা ডিস্ক, স্লিপ করে তার পেছনে থাকা নার্ভের ওপর চাপ দিতেই শুরু হয়। কারেন্ট লাগার মতো ব্যথা। দেখা দেয় অ্যাকিউট ডিক্স প্রোল্যাপস। যা স্লিপ ডিস্কের সমস্যা হিসেবে পরিচিত। এই সমস্যা সবচাইতে বেশি হয় যদি না বুঝে ব্যায়াম করা হয় কিংবা কোনও কিছু তুলতে গিয়ে কোমরে হ্যাঁচকা টান লাগে। যাঁদের ওজন প্রয়োজনের তুলনায় কম তাঁদের ক্ষেত্রে কক্সিডাইনিয়ার সমস্যা বেশি। হাড়ের আশপাশে মাংস কম থাকলে সেখান থেকেও আসতে পারে এই সমস্যা।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।