আজকাল শরীরে নানা রকম রোগ সমস্যা জাঁকিয়ে বসছে। যদিও এর জন্য মূল হল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে রয়েছে খাদ্যাভ্যাসও। অতিরিক্ত ক্যালোরির খাবার খাওয়া, জাঙ্ক ফুড বেশি খাওয়া এসব কারণের জন্য ওজন বাড়ছে। ওবেসিটির সমস্যা তো আসছেই সেই সঙ্গে জাঁকিয়ে বসছে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মত সমস্যা। এছাড়াও বাড়ছে থাইরয়েডের সমস্যাও। প্রথম থেকে নিজের শরীরের যত্ন না নিলে পরবর্তীতে জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। নিয়মিত কিছু রক্তপরীক্ষা করান, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন তবেই সুস্থ থাকবেন।
শরীর সুস্থ রাখতে গেলে প্রথমেই যে টেস্টটি করানো জরুরি তা হল কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (CBC)। রক্তের সব উপাদান অর্থাৎ লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্ত কণিকা, প্লেটলেট, হিমোগ্লোবিন ইত্যাদি সঠিক পরিমাণে আছে নাকি তা দেখতেই এই রক্তপরীক্ষার কথা বলা হয়। ডায়াবেটিসের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। যে কারণে প্রতি ৬ মাস অন্তর সব মানুষের ব্লাডসুগার পরীক্ষা করে নেওয়া দরকার। রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা কমে গেলে বা অগ্ন্যাশয় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি না হলে তখনই রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই রিপোর্ট চিকিৎসককে দেখান, তাঁর পরামর্শ মতো চলুন। প্রয়োজনে ওষুধ খেতে হবে।
আজকাল লিপিড প্রোফাইল টেস্টও ভীষণ রকম জরুরি। শরীর সুস্থ রাখতে এই রক্ত পরীক্ষা করতেই হবে। শরীরে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা জানতে এই টেস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বাড়লেই সেখান থেকে আসে হৃদরোগের ঝুঁকি। থাইরয়েড গ্রন্থিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর যখন রক্তপরীক্ষা করাচ্ছেন তখন থাইরয়েডের পরীক্ষাও করিয়ে নিন। অতিরিক্ত চিন্তা, অনিয়মিত পিরিয়ডসের জন্য দায়ী থাইরয়েড হরমোনও। থাইরয়েড প্যানেল টেস্ট করে চিকিৎসককে দেখান। প্রয়োজন বুঝলে তিনিই নির্দিষ্ট ডোজের ওষুধ দেবেন।
শরীর সুস্থ রাখতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ এসব খেতেই হবে। আর তাই রক্তে এই সব উপাদান ঠিক মত আছে কিনা তা জানতেই প্রয়োজনীয় কিছু রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। নইলে পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ইদানিং খুব বেড়েছে। আর তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর লিভারের পরীক্ষা করিয়ে নিন। হেপাটাইটিস বি, লিভারের কোনও সমস্যা থাকলে পরীক্ষাতেই ধরা পড়ে যাবে। শরীরে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্লোরাইড এসব নির্দিষ্ট মাত্রায় আছে কিনা তা জানতে ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষা করান। স্বাভাবিতের তুলনায় এই সব উপাদান কম বেশি থাকলে তখনই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়। ডিহাইড্রেশন থেকে মারাত্মক খিঁচুনিও কিন্তু হতে পারে। এমনকী তা জীবন সংশয়েরও কারণ হতে পারে।