ওমিক্রনের সংক্রমণ যখন প্রথম শুরু হয় তখন এর উপসর্গের সঙ্গে সাধারণ ফ্লু এর সম্পর্কের কিন্তু বিশেষ কোনও ফারাক ছিল না। সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, ক্লান্তির মত উপসর্গ ছিল। জ্বরও যে খুব বেশি ছিল এমন নয়। আর আক্রান্তেরা সকলেই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়নি বা অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা যায়নি। তবে বর্তমানে ওমিক্রনের সংক্রমণ যে ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে কিন্তু উদ্বেগেই রয়েছেন চিকিৎসকেরা। ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রচুর সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে
। ছাড় পায়নি বাচ্চারাও। তবে বর্তমানে ওমিক্রনের উপসর্গের তালিকায় বেশ কিছু নতুন রোগ-লক্ষণ যুক্ত হয়েছে। ক্লান্তি, পেশির ব্যথার মত সমস্যা তো ছিলই। কিন্তু বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই লং কোভিডের সমস্যা হচ্ছে। এছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে পায়ের পেশিতে তীব্র ব্যথা এবং ঘাড়ে ব্যথাও থাকছে। সম্প্রতি এই তালিকায় আরও দুটি লক্ষণ যুক্ত হয়েছে।
আমেরিকার ZOE কোভিড স্টাডির গবেষকরা যেমন জানিয়েছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ডায়ারিয়া, পেটে ব্যথা, হজমে সমস্যা এবং অসুস্থতা বোধ এসবও থাকছে। বরং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল লক্ষণগুলি আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রকট হয়েছে। যদিও কোভিডের উপসর্গ হিসেবে এই জ্বর, ক্লান্তি, গন্ধ, স্বাদ চলে যাওয়ার মত সমস্যা কিন্তু আগে থেকেই ছিল। তবুও বিশেষজ্ঞদের মতে, ওমিক্রনের লক্ষণ কিছুটা হলেও আলাদা। তবে ওমিক্রনের উরসর্গ হিসেবে এখন অনেকের মধ্যেই এই দুটি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন আক্রান্তেরা। তা হল একেবারেই খাবার এড়িয়ে যাওয়া বা ক্ষুধা মন্দা। বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই খাবার কোনও ইচ্ছে থাকছে না। এমনকী খাবার যে ঠিকমতো হজম হচ্ছে তাও কিন্তু নয়। তবে গত বছর যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁদের অনেকের মধ্যেও কিন্তু দেখা গিয়েছিল এই সমস্যা। যদিও গবেষকরা বলছেন, এই খিদে মন্দার সমস্যা যদি কিছুদিনের জন্য থাকে তাহলে তা চিন্তার কারণ নয়। কারণ যে কোনও ভাইরাসের সংক্রমণেই এই সমস্যা হয়।
তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই সমস্যা উদ্বেগজনক। কারণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের জটিলতা তুলনায় বেশি হতে পারে। তবে খাবার খেতে না পারলে জোর করে খাবার প্রয়োজন নেই। কিন্তু শরীরে যাতে জলের অভাব না হয় সেদিকে কিন্তু খেয়াল রাখতেই হবে। প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। খিদে মন্দা, ক্লান্তি এসব খুবই স্বাভাবিক। এবং তা কাটতেও বেশ খানিক সময় লাগে। তবে যদি রাতের দিকে বমি, অতিরিক্ত ঘাম হয় তাহলে কিন্তু অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। আর তাই সংক্রমণের কবলে পড়লে জল বেশি করে খেতে হবে। এছাড়াও টিকা কিন্তু অত্যন্ত জরুরি। সেই সঙ্গে ভিড় এড়িয়ে চলুন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।