কোভিড আক্রান্তের গ্রাফ ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ২,৪৭, ৪১৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৮০ জনের। সেই সঙ্গে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও দাঁড়িয়েছে ৪, ৮৬৮ তে। কোভিডের নতুন পরিবর্তিত রূপ ওমিক্রন (Omicron) এখন ত্রাস চালাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। ভারতে এই নয়া স্ট্রেন কিন্তু বেশ শক্তিশালী। ওমিক্রনের সংক্রমণ ডেল্টার (Covid19) তুলনায় খানিক লঘু হলেও ডেল্টার থেকে এই ভাইরাস কিন্তু ৪ গুণ বেশি শক্তিশালী। বিশ্বজুড়েই সুনামির আকারে আছড়ে পড়েছে ওমিক্রন।
যে কারণে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থেকে চিকিৎসকরা। ওমিক্রনের উপসর্গ (Omicron Symptoms) আর সাধারণ সর্দি কাশির উপসর্গের মধ্যে তেমন কোনও ফারাক না থাকলেও প্রতিদিন যে ভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই ওমিক্রনকে তেমন ভাবে গুরুত্ব দিতে চাননি। সর্দি-কাশির সমস্যাকেও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন। যে কারণে বার বার সতর্কবার্তা দিচ্ছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO)-এর বিশেষজ্ঞরা। যদিও অনেকেই আবার বলেছেন কোভিড অতিমারী শেষ হবার সময় এসেছে। হয়ত এই ওমিক্রনের মধ্যে দিয়েই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে করোনা।
কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্টে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে কিন্তু এখনও পর্যন্ত রোগ লক্ষণ সামান্যই। সর্দি-কাশি-জ্বর আর মাথাব্যথা। এছাড়াও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে সর্দি পড়া এই সব সমস্যাও রয়েছে। যা সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতই। খুব বেশি জ্বর কিংবা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কথা কিন্তু এখনও পর্যন্ত শোনা যায়নি। এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে সেই সংখ্যাটাও খুব একটা বেশি নয়। সকলে বাড়িতে থেকে এক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। ফলে এর থেকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা সব মানুষের মধ্যেই তৈরি হয়েছে রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা।
এছাড়াও যাঁরা এই দুটো তরঙ্গে SARs-COV-2-তে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবেই অনাক্রম্যতা তৈরি হয়েছে বলে চিকিৎসকদের আশা। যা প্রাকৃতিক অনাক্রম্যতা হিসেবেই তাঁরা ধরছেন। শুধু তাই নয় অনেক গবেষণা থেকেই দেখা গিয়েছে ওমিক্রন মানবদেহে ‘প্রাকৃতিক ভ্যাকসিন’ হিসেবেই কাজ করছে। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর ইয়ান জোনাস এই ধারণাকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেছেন- ওমিক্রন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে ঝুঁকির নয়। বরং গুরুতর অসুস্থতা তৈরি না করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যদিও অনেক গবেষণকই এই ধারণাকে আমল দিতে নারাজ।
শীর্ষ স্থানে থাকা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওমিক্রন প্রায় অপ্রতিরোধ্য এবং বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরও বৃহৎ জনগোষ্ঠী সংক্রমিত হবেন। ওমিক্রন প্রাথমিক ভাবে শ্বাসযন্ত্রের উপর আঘাত করছে না। যে কারণে অনেকেই মনে করছেন, ওমিক্রন বিশেষ কাবু করতে পারবে না। বিশেষজ্ঞরা এমনটাও বলেছেন- যদি ওমিক্রনের পরবর্তী সময়ে কোভিডের আর কোনও ভ্যারিয়েন্ট না আসে তাহলে হয়ত সাধারণ রোগৃজ্বালার মতই কোভিড থেকে যাবে। এবং মানুষ নিজে থেকেই তার মোকাবিলা করতে পারবে।
একই ভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গবেষণাও এই একই ইঙ্গিত দিয়েছে। সেই গবেষণায় বলা হয়েছে সম্ভবত, ওমিক্রনের হাত ধরেই কোভিড বিদায় নেবে। ঘটবে অতিমারীর অবসান। সংক্রমণ যদি আর না বাড়ে তাহলে এবার কমবে মৃত্যুহারও। হয়ত আসতে পারে সুপার কোনও ভ্যারিয়েন্ট। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বেশি বাড়িয়ে তুলবে। তবে এসবের পরও কিন্তু মেনে চলতে হবে যাবতীয় কোভিড বিধি।
তথ্যসূত্র- দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Covid Omicron Symptoms: এই তিন উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিন