ঠিক এক মাস আগেই দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম উদ্ভূত হয় করোনার এই নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন। এরপরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয় নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের কথা। দক্ষিণ আফ্রিয়ায় ধরা পড়ার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে বিশ্বজুড়ে। একমাসের মধ্যে ৫০টিরও বেশি দেশে ধরা পড়েছে ওমিক্রনের সংক্রমণ। আর এই নতুন ভ্যারিয়েন্টকেই করোনার তৃতীয় ঢেউ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এই ভ্যারিয়েন্ট যে ভাবে ট্রান্সমিট হয়েছে তাতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ওমিক্রন আরও দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়াবে। হচ্ছেও তাই। অনেক তাড়াতাড়ি অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন ওমিক্রনে। ওমিক্রনের রোগ-লক্ষণ খুব একটা প্রকট নয়। সাধারণ জ্বর-সর্দির সঙ্গে ওমিক্রনের খুব একটা ফারাক নেই। ডেল্টার প্রভাবে প্রচুর মানুষ, প্রাণ হারিয়েছেন। বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট এসব সমস্যা ছিল।
কোভিডের টিকার দুটো ডোজ নেওয়ার পরও অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ফের যখন বাড়ছে সংক্রমণ তখন প্রশ্ন উঠছে সত্যিই কি এই দুটো টিকা নেওয়া থাকলেই মিলবে কোভিড থেকে রেহাই? বাইরের বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। নতুন বছর থেকে আমাদের দেশেও বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে। অগ্রাধিকার পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং যাঁরা একদম প্রথম সারিতে থেকে সরাসরি কোভিডের সঙ্গে লড়াই করছেন। কোভিডের টিকা রোগ-লক্ষণ কমায়, জটিলতা কমায় কিন্তু টিকা নিলে যে আপনি আর সংক্রমণের শিকার হবেন না তা একেবারেই ঠিক নয়।
যে কোনও ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য শরীরে গড়ে ওঠে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও তাই। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অ্যান্টিবডিগুলিরও রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রাকৃতিক ভাবে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা শরীরে গড়ে ওঠে ঠিকই, কিন্তু তা যথেষ্ঠ নয়। এমনকী ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নেওয়ার পরও যে আপনি করোনায় আক্রান্ত হবেন না এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। এসবের পরও কিন্তু টিকা নিতেই হবে। যাঁরা ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে তাঁরাও কিন্তু পুনরায় আক্রান্ত হতে পারেন এই ভাইরাসে। তবে সমস্যা অতটা তীব্র হবে না।
ওমিক্রনের প্রভাবে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে কারণ অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই ভাইরাসে। কারণ আমাদের শরীরে যে অ্যান্টিবডি রয়েছে সে এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটিকে চট করে চিনতে পারছে না। যে কারণে বাড়ছে সংক্রমণ। ওমিক্রনের প্রভাব এখনও বিশেষ না হলেও চোখ রাঙাচ্ছে ডেলমিক্রন। এমিক্রন আর ডেল্টার সংমিশ্রণে সৃষ্ট এই ভাইরাসের প্রভাব কিন্তু হতে পারে গুরুতর। যা ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপে।
করোনার এই তৃতীয় ঢেউয়ে অনেক বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন কিন্তু এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর কোনও খবর নেই। জ্বর, গলা ব্যথা, শরীরে ক্লান্তি- এসব হালকা উপসর্গই থাকছে।
আরও পড়ুন: Covid vaccine: ওমিক্রন আপনাকে কতটা কাবু করবে তা নির্ধারণ করবে কোভিড টিকার ডোজ! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?