COVID-19 In Children: রোজ বাচ্চা মাথার ব্যথায় অস্থির? কোভিডের প্রকোপে বাড়ছে মানসিক সমস্যা, জানাচ্ছে সমীক্ষা

TV9 Bangla Digital | Edited By: দীপ্তা দাস

Aug 07, 2022 | 7:36 PM

Mental Health: সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় ধরা পড়েছে চমকপ্রদ তথ্য। কোভিড-এর কারণে তৈরি হওয়া সামাজিক দূরত্ব, রোগজনিত উদ্বেগ, অসুখে আক্রান্ত হওয়ার উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে তুলেছে শিশুদের নানাবিধ মানসিক সমস্যা। বাচ্চার সঙ্গে অভিভাবকদের কথা বলার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।

COVID-19 In Children: রোজ বাচ্চা মাথার ব্যথায় অস্থির? কোভিডের প্রকোপে বাড়ছে মানসিক সমস্যা, জানাচ্ছে সমীক্ষা

Follow Us

কোভিড ১৯ অতিমারির (COVID 19 Pandemic) সময়ে যে সমস্ত বাচ্চা কোভিডে আক্রান্ত (Corona in Children) হয়েছিল তাদের নিয়ে সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা গিয়েছে এই ধরনের বাচ্চাদের মধ্যে মাথাব্যথা (Headache) এবং অল্পেই উদ্বেগে ভোগার (Mental Stress) প্রবণতা বৃদ্ধি পয়েছে। সাম্প্রতিক ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে অতিমারি যথেষ্ট মাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্যে (Mental Health)। জার্নাল অব চাইল্ড নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ওই গবেষণার তথ্য। সমীক্ষা অনুসারে, অতিমারির সময়ে পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তৈরি হওয়া দূরত্ব শিশুদের মনোজগতে নেতিবাচক ছাপ ফেলেছে। তারা বেশি মাত্রায় উৎকণ্ঠায় ভুগছে। এছাড়া অতিমারির সময়ে যে কোনও সময় অসুখে পড়ার আশঙ্কাও সর্বদা বিরাজ করত তাদের মধ্যে। এর ফলে মাথা ব্যথা, টেনশনে ভোগার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের মধ্যে।

সমীক্ষার মুখ্য গবেষক ছিলেন আমেরিকার চিলড্রেন ন্যাশনাল হসপিটালের হেডেক প্রোগ্রামের ডিরেক্টর মার্ক ডিসাবেল্লা। তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে স্ট্রেস এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন বাচ্চাদের ভালো থাকা ও মেজাজে প্রভাব ফেলে তা এই গবেষণার ফলাফলের সাহায্যে চিকিৎসক ও অভিভাবকরা সহজেই বুঝতে পারবেন।

‘ভার্চুয়াল পরিবেশে বাস করার বাধ্যবাধকতা শিশুদের মধ্যে একাকিত্ব এবং উদ্বেগের অনুভূতির জন্ম দিতে পারে। এছাড়া স্ক্রিন টাইম বেড়ে যাওয়ার কারণে হতে পারে ঘন ঘন মাথা ব্যথার সমস্যা।’— বলেছেন মার্ক। ওই সমীক্ষায় ২০২০-এর গ্রীষ্ম থেকে ২০২১ –এর শীত পর্যন্ত ১০৭জন রোগীকে প্যানডেমিক শুরুর পর থেকে মাথা ব্যথা ও জীবনযাত্রার প্রকৃতি পরিবর্তন সম্পর্কিত একাধিক প্রশ্ন করা হয়েছিল। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, প্যানডেমিক শুরুর আগে ৬০ শতাংশ রোগী মাসে ১৫ দিনেরও কম সময় জুড়ে মাথা ব্যথার সমস্যা সম্পর্কে জানিয়েছে। তবে অতিমারি শুরুর পর সংখ্যাটা নেমে আসে ৫০ শতাংশে।

দেখা গিয়েছে যেখানে অতিমারির আগে ২২ শতাংশ রোগী প্রতিদিনই মাথা ব্যথার অভিযোগ করতো, সেখানে অতিমারীর শুরুর পর ৩৬ শতাংশ রোগী নিত্যদিন মাথা ব্যথার কথা জানিয়েছে। ৪৯ শতাংশ রোগী জানিয়েছে, তাদের মাথা ব্যথার উপসর্গ আরও খারাপ আকার নেয় অতিমারি শুরুর পর। ৫৪ শতাংশ রোগী জানিয়েছে, তাদের শারীরিক সক্রিয়তার মাত্রা হ্রাস পেয়েছে অতিমারির কারণে। অতিমারির সময় কতখানি সময় স্ক্রিনের সামনে কাটতো? এই প্রশ্নের উত্তরে ৬১ শতাংশ রোগী উত্তর দিয়েছে তারা দিনের মধ্যে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় স্ক্রিনের সামনে কাটাত।

মার্ক জানিয়েছেন, স্ক্রিন টাইম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সরাসরি মাথা ব্যথার উপসর্গ বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক নিয়ে দৃঢ় তথ্য মেলেনি। তবে স্ক্রিন টাইম যে মাথা ব্যথার অন্যতম অনুঘটক তা নিয়ে বারবার রোগী ও তার আত্মীয়রা বয়ান দিয়েছে। এছাড়া এক্সারসাইজের অভাবও মাইগ্রেনের সমস্যা আসার অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
হঠাৎ করেই বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধ হওয়া, রোজকার জীবনযাত্রা আমূল বদলে যাওয়া, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা ও তার সঙ্গে মাথা ব্যথার উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকা পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করে ফেলেছিল।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা উৎকণ্ঠা, মেজাজের পরিবর্তন এবং কাজের চাপের কথা জানিয়েছিল। মুখ্য গবেষকের মতে, উপরিউক্ত ঘটনাগুলি মাথা ব্যথা, উদ্বেগ ও অবসাদের মাত্রা বাড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। মাথা ব্যথার রোগীর মেজাজের দ্রুত পরিবর্তন হয়। বিশেষ করে তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তায় ভোগা এবং অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ার লক্ষণ দেখা যায়। রোগীরা জানিয়েছে, কোয়ারেন্টাইন ছিল এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গোদের উপর বিষফোড়ার মত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উক্ত সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। তাই এই বিষয়ে আরও স্টাডি হওয়া দরকার। তবে মুখ্য গবেষক বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি চাইলে বাচ্চাদের সঙ্গে অভিভাবকদের কথা বলা উচিত। তাদের সাহায্যের জন্য অভিভাবকদেরই এগিয়ে যেতে হবে। দরকার পড়লে নিতে হবে দক্ষ সাইকিয়াট্রিস্ট ও সাইকোলজিস্টের সাহায্য।

Next Article