২০১৭ থেকে ২০২৩—গত ৭ বছর ধরে বর্ষার সময় ডেঙ্গির প্রকোপ যেন খুব সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ও ব্যতিক্রম হল না। গত দু’বছর পুজোর মুখে বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছিল ডেঙ্গির। কিন্তু চলতি বছরে বর্ষার শুরু থেকেই রাজ্যে হু-হু করে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। গত বছর ১ লক্ষ ৭ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছিলেন ডেঙ্গিতে। এ বছর শুধু ৩ জুলাইয়ের মধ্যেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দু’হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। বর্ষা এখনও বাকি। পুজো আসতেও মাস তিনেকের মতো সময় বাকি আছে। এর মধ্যে মশা কিন্তু তার খেলা দেখাতে পারে। সাবধান না হলে বিপদ ধেয়ে আসছে।
গত শনিবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘গত বছরের নিরিখে ডেঙ্গি সংক্রমণের হার এখনও পর্যন্ত ৩০ শতাংশ কম। পুরসভার তরফে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’’ কিন্তু সংক্রমণের হার কম বলে এবং পুরসভা থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে আপনি চুপ করে বসে থাকতে পারেন না। ডেঙ্গি প্রতিরোধ করতে হলে প্রশাসন ও জনগণ উভয়কেই সমান তালে কাজ করতে হবে।
ডেঙ্গি প্রতিরোধে যা যা আপনার করণীয়-
স্থির জলে মশা ডিম পাড়ে। সেখান থেকে ৭-১০ দিনের মধ্যে বাড়তে থাকে মশার ঘনত্ব। জমা জলের স্তর যদি আধ ইঞ্চিও হয়, সেখানে মশার লার্ভা জমতে পারে। তাই চায়ের ভাঁড়, ডাবের খোলা, পরিত্যক্ত টায়ার, ভাঙা পাত্র, প্যাকেট, প্লাস্টিকের কৌটো বা ঢাকনা, গ্লাস, অব্যবহৃত বালতি, মগ, ত্রিপল, টবের চারধারে জল জমলে সেটা ফেলে দিন। ফ্রিজের ট্রে-তেও জল জমে ডেঙ্গি মশা জন্ম নিতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনার বাড়ির ভিতর বা বাইরের চারপাশে আবর্জনা, জমা জল পরিষ্কার করুন। এছাড়া রাতে অবশ্যই মশারি খাঁটিয়ে ঘুমোন। এতে ডেঙ্গির হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
ডেঙ্গি জ্বর হলে যা করবেন-
ডেঙ্গি হলে প্লেটলেট কাউন্ট কমে যায়। এতে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে প্রথম থেকেই সচেতন থাকা জরুরি। ডেঙ্গি হলে জ্বর হবেই। আর জ্বর হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখান। জ্বর আসা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৭ দিন পর পর্যন্ত থাকলে এনএস-১ পরীক্ষা করান। জ্বর আসার ৫-৯ দিন পর আইজিএম পরীক্ষা করান। জ্বর আসার অন্তত ১৪ দিন পর আইজিজি পরীক্ষা করানো জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে ডেঙ্গি ধরা পড়লে শরীরে জটিলতা এড়ানো সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ মানুষ চিকিৎসার সাহায্যে সুস্থ ডেঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে। শুধু সময়মতো ডাক্তার কাছে যেতে হবে এবং রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তাজা শাকসবজি, ফল খান। আর প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।