সকালে ঘুম থেকে উঠেই ধোঁয়া ওঠা গরম কফি বা চা (Very Hot Coffee and Tea) না হলে দিন শুরুই হয় না অধিকাংশের। দিনে ২-৪ বার গরম চা বা কফি খাওয়ার অভ্যেস রয়েছে বহুজনের। খুব গরম চা বা কফি অনেকেরই পছন্দের। সম্প্রতি PubMed-এর গবেষণায় জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত গরম জল, চা ও কফির মতো পানীয় পান করলে খাদ্যনালীর ক্যানসারে (Esophagus Cancer) প্রবণতা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। দীর্ঘদিন ধরে অ্যালকোহল সেবন করলে যেমন মেদ, রক্তচাপের মাত্রা বৃদ্ধি করে ও মারাত্মক কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়ায় তেমনি প্রতিদিন গরম গরম চা-কফি খেলেও ক্যানসারের ঝুঁকি (Risk of Cancer) বাড়ায়। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গরম চা-কফি খেলে খাদ্য়নালীতে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শরীরের ভিতরে থাকা খাদ্যনালী হল একটি ফাঁপা নল, যা মুখ থেকে পেট পর্যন্ত বিস্তৃত। তরল, লালা ও চিবিয়ে খাওয়া খাবাররের বাহক হিসেবে কাজ করে। খাদ্য়নালীকে টিউমার কোষের বৃদ্ধি বা খাদ্য়নালীর আস্তরণের অস্বাভাবিক পরিবর্তনের জেরে খাদ্যনালীতে ক্যানসারে পরিণত হয়। গরম জল, চা বা কফির মতো গরম পানীয় পান করলে খাদ্যনালীতে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় তা প্রমাণিত। বসাধারণত স্বাস্থ্যকর পানীয় সীমিত পরিমাণে পান করা হয়। চা ও কফির মধ্যে ক্যাফেইন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। তবে খুব গরম চা বা কফি খেলে খাদ্যনালীর ক্ষতি হতে পারে। আর সেই কারণেই ক্যানসারের ঝুঁকি তিনগুণ বেড়ে যায়। ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে চায়ের কাপে প্রথম চুমক দেওয়ার আগে ঠান্ডা হতে দিন। আবার অনেকেই গরম মদ খেতে পছন্দ করেন, তাদের ২.৭ গুণ বেশি ক্যানসারের ঝুঁকি দেখা যায়। অন্যদিকে যারা খুব গরম চা ও কফি পান করতে পছন্দ করেন, তাদের ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায় প্রায় ৪.১ গুণ বেশি।
প্রসঙ্গত, ক্যানসারের উপর গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা অনুসারে খাদ্যনালী ক্যান্সার বিশ্বের অষ্টম সর্বাধিক সাধারণ ক্যানসার। আর এই মারণ রোগের কারণে প্রতি বছর আনুমানিক ৪ লক্ষ মানুষ মারা যান। সাধারণত ধূমপান, অ্যালকোহল, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণেও খাদ্য়নালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে প্রতিদিন বেশ গরম পানীয় খাওয়ার কারণে খাদ্যনালীতে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শুধু গরম চা বা কফি পান করলে ক্যান্সার হয় না। নিয়মিত গরম চা বা কফি পান করার পাশাপাশি, যদি অ্যালকোহল সেবন ও ধূমপানের মতো অন্যান্য বাজে অভ্যেস থাকে, তাহলেও খাদ্য়নালীতে ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)