কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিড এবং ডায়াবেটিসের মতো রক্তে যদি অ্যামোনিয়ার মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে তা কিন্তু শরীরের জন্য একেবারে ভাল নয়। হঠাৎ করে রক্তে এই অ্যামোনিয়ার মাত্রা বেড়ে গেলে সেখান থেকে একাধিক সমস্যা হয়। অ্যামেনিয়া রক্তনালী আর মেরুদণ্ডের জন্য একেবারে বিষাক্ত। এই অ্যামোনিয়া NH3 নামেও পরিচিত। একরকম বর্জ্য পদার্থ হল অ্যামোনিয়া। যা শরীরের বর্জ্য উপাদান হিসেবেই চিহ্নিত। আমাদের অন্ত্রে তৈরি হয় এই অ্যামেনিয়া। প্রোটিন হজম করার সময় তা ভেঙে গিয়ে এই অ্যামোনিয়া তৈরি হয়। অ্যামেনিয়া লিভার থেকে উৎপন্ন হলেও তা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসে। কিন্তু কোনও কারণে লিভার যদি এই অ্যামোনিয়া শরীর থেকে বের করতে না পারে তখনই তা জমতে থাকে। এবং রক্তে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বাড়ে। এই অবস্থাকে হাইপারমোনোমিয়া বলা হয়। আর এই হাইপারমোনোমিয়া শরীরের জন্য একেবারে ভাল নয়। একরকম লাইফ থ্রেটনিংও বটে। অ্যামোবিয়ার মাত্রা বাড়লে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করতেই হবে, নইলে বিপদ।
শরীরে অ্যামোনিয়া বেড়ে যাওয়ার একাধিক কারণ থাকে। লিভারের সমস্যা হলে সেখান থেকে অ্যামোনিয়া বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবচাইতে বেশি। লিভারের রোগে ভুগলে রক্তে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বাড়বেই। এর এই অ্যামোনিয়া বাড়লে লিভার ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এর ফলে লিভার ফেইলিওর, কিডনি ফেইলিওয়ের মত সমস্যা হতে পারে। আরযে কারণে কিছু খাবার এডিয়ে চলতেই হবে। পেঁয়াজ, সোয়াবিন, আলুর চিপস, সালামি, মাখন-এসবের মধ্যে অ্যামোনিয়া বেশি পরিমাণে থাকে।
অ্যামোনিয়া বৃদ্ধির লক্ষণ
সারাক্ষণ মাথাব্যথা
বমি বমি ভাব
বিরক্তি বোধ করা
কথা বলতে সমস্যা হওয়া
আচরণগত পরিবর্তন
খিঁচুনির সমস্যা
যাঁদের লিভার বা কিডনির কোনও সমস্যা রয়েছে তাঁদের সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। ওষুধ চলাকালীন যদি ঘুমের সমস্যা হয়, শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। প্রয়োজন মতো ওষুধ খেতে হবে।
প্রোবায়োটিক খান- প্রোবায়োটিক খুব উপকারী ব্যাকটেরিয়া। যা অন্ত্রকে হজম করতে সাহায্য করে।
তাই রোজ নিয়ম করে টকদই খান। এছাড়াও খেতে পারেন বাটার মিল্ক। অ্যামোনিয়াকে শরীর থেকে দূর করতে ভূমিকা রয়েছে এই প্রোবায়োটিকের।
রেড মিট নয়- রেড মিট একেবারেই খাওয়া চলবে না। শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর এই মাংস। মুরগির মাংস চলতে পারে। তবে ফ্যাট ছাড়া খেতে হবে।
উদ্ভিজ প্রোটিন খান– বিভিন্ন রকম ডাল বেশি করে খেতে হবে। রোজ একবাটি করে মুসুরের ডাল খান। কারণ ডাল ধীরে হজম হয়, ফলে অ্যামোনিয়া তৈরি হতে পারে না।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খান- জিঙ্ক অ্যামোনিয়ার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। লিভারের রোগে যাঁরা আক্রান্ত তাঁদের মধ্যে জিঙ্ক কম থাকে। আর তাই জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতেই হবে।