তরকারিতে স্বাদ-সুগন্ধ বাড়ানো কিংবা আমিষ-নিরামিষের লড়াই নয়। পেঁয়াজের কিন্তু একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। শরীর সুস্থ রাখতে ভীষণই ভাল হল পেঁয়াজ। যতই তাঁর আঁশ-নিরামিষ নিয়ে দ্বন্দ্ব থাক না কেন। স্যালাড থেকে পোস্ত- পেঁয়াজ ছাড়া কিন্তু ভাবাই যায় না। যতই দাম চড়ুক না কেন তবুও পাতে এক টুকরো পেঁয়াজ চাই চাই। গরমকালে পান্তা ভাতের সঙ্গে পাতে পেঁয়াজ থাকবে না, তা কিন্তু কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বরং বিশেষজ্ঞরা সব সময় বলেন গরম কালেই বেশি করে পেঁয়াজ খেতে। কারণ এতে পেট ঠান্ডা থাকে। আবার পেঁয়াজের গন্ধের কারণেও কিন্তু অনেকে তা এড়িয়ে চলতে চান। কেউ আবার বাটা মশলা হিসেবে ব্যবহার করেন পেঁয়াজ। কিন্তু জানেন কি, পেঁয়াজ আমাদের একাধিক সংক্রমণ জনিত অসুখ থেকে রক্ষা করে। আগেকার দিনে শরীরে বোলতা কিংবা মৌমাছি হুল ফোটালে প্রথমে পেঁয়াজের রসই ব্যবহার করা হত। সেই সঙ্গে পেঁয়াজের মধ্যে থাকে ফ্ল্যাভিনয়েড। যা আমাদের হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ক্যানসার এবং ডায়াবিটিসের হাত থেকেও কিন্তু রক্ষা করে। কিন্তু গরমকালে কেন অবশ্যই কাঁচা পেঁয়াজ রাখবেন আপনার রোজকার ডায়েটে?
কাঁচা পেঁয়াজ আমাদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থেকেও দূরে রাখে। কারণ গরমে শরীরে একাধিক সংক্রমণ জনিত সমস্যা বেড়ে যায়। পেটগরম, হজমের সমস্যা, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ এসব লেগেই থাকে। আর তাই এই সময় সবার প্রথম পেঁয়াজকেই কিন্তু পাশে প্রয়োজন। ডায়েটিশিয়ান আসমা আলম যেমন বলেন, গরম আবহাওয়াতে আমাদের একমাত্র বাঁচিয়ে রাখতে পারে পেঁয়াজ।
পেঁয়াজের মধ্যে যেমন পুষ্টি রয়েছে তেমনই কিন্তু পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে কিছু শক্তিশালী রাসায়নিক যৌগ। যা আমাদের ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে দূরে রাখে। সেই সঙ্গে কিন্তু হজমেও সাহায্য করে। এছাড়াও যে কোনও রান্নায় স্বাদ বাড়াতে পেঁয়াজের জুড়ি মেলা ভার।
পেঁয়াজের মধ্যে খনিজ, ভিটামিন এই সবই রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এমনকী প্রাচীনকালে পেঁয়াজের এই নির্যাসকে কাজে লাগিয়ে অনেক রকম ওষুধও কিন্তু তৈরি করা হয়েছে। আর্য়ুবেদ শাস্ত্রে এখনও পেঁয়াজের একটি নির্ভরযোগ্য স্থান রয়েছে।
মাথাব্যথা, আলসার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও কিন্তু পেঁয়াজের ব্যবহার করা হত। মুখের আলসারের সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। আর তাঁদের জন্যেও কিন্তু উপকারী পেঁয়াজ। পেঁয়াদের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ৪৪। সেই সঙ্গে ভিটামিন-সি থাকে প্রচুর মাত্রায়। যা আমাদের শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। থাকে প্রচুর পুষ্টিও। ফলে কোলাজেন গঠন নতুন কোশ তৈরি এবং কোশের ক্ষত পূরণে ভূমিকা রয়েছে পেঁয়াজের।
পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে কোয়ারসেটিন নামক উপাদান যা প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন হিসেবে কাজ করে। গরমে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বাড়ে। পোকার কামড় থেকে সংক্রমণেরও সম্ভাবনা থাকে। তাই সেক্ষেত্রে পেঁয়াজের রস খুব ভাল কাজ করে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Natural Sugar: সুস্থ থাকতে চিনি নয়, সঙ্গী করুন এই ৫ প্রাকৃতিক মিষ্টি