শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দিলে কী করবেন জেনে নিন?

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Sep 04, 2021 | 10:16 AM

শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিস দেখা যাওয়ার আরেকটি কারণ হল জেনেটিক্স। জিনগত কারণেও শিশুরা অনেক সময় ডায়বেটিসে আক্রান্ত হয়।

শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দিলে কী করবেন জেনে নিন?
প্রতীকী ছবি

Follow Us

বর্তমানে ডায়বেটিস একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমগ্র বিশ্বে প্রায় পাঁচশো মিলিয়ন মানুষ ডায়বেটিসের সমস্যায় ভুগছেন। ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার অর্থ আপনার শরীরে আরও একাধিক রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়া। এমন কি কোনও ছোট ক্ষতও সহজে সারতে চায় না ডায়বেটিসের রোগীদের। অন্যদিকে, ডায়বেটিস সম্পর্কে একাধিক ভুল ধারণাও মানুষের মধ্যে রয়েছে। যেমন অতিরিক্ত চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার খেলেই ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিসের সমস্যা দেখা দেওয়ার পিছনে কী কারণ রয়েছে জানেন?

শিশুদের মধ্যে ক্যান্ডি, চকোলেট এই ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেশি। অনেক মানুষের ধারণা সেখান থেকেই শিশুদের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে এই রোগ। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ২ বছরের শিশুর মধ্যেও দেখা দিচ্ছে ডায়বেটিস। অর্থাৎ চিনি বা শর্করা গ্রহণের দ্বারা শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিস হয় না। বিশেষত টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে। টাইপ ১ ডায়াবেটিস একটি অটোইমিউন অবস্থা, যেখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করার ক্ষমতা হারায়। এর সঠিক কারণ এখনও অজানা এবং এটি প্রতিরোধ করারও কোনও উপায় নেই। আর শিশুদের মধ্যে এই টাইপ ১ ডায়াবেটিসই বেশি লক্ষ্য করা যায়।

টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও চিনি বা শর্করা গ্রহণ নির্ভর করে না। শিশুদের ক্ষেত্রে এটা মূলত নির্ভর করে অত্যধিক ওজন নির্ভরের ওপর। যে সব শিশু স্বাস্থ্যকর খাবার খায় না, কিংবা অস্বাস্থ্যকর ও শর্করা জাতীয় খাবার বেশি খায় বা খায় না তারা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের শিকার হলেও হতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আসল কারণ হল ওজন বৃদ্ধি। শিশুদের মধ্যে ডায়বেটিস দেখা যাওয়ার আরেকটি কারণ হল জেনেটিক্স। জিনগত কারণেও শিশুরা অনেক সময় ডায়বেটিসে আক্রান্ত হয়। পরিবারে যদি ডায়বেটিস টাইপ ২-এর রোগী থাকেন সেখান থেকেও প্রভাব পরে শিশুর ওপর।

দুৰ্ভাগ্যবশত, টাইপ ১ ডায়াবেটিসের কোনও চিকিৎসা নেই। এই বিষয় নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। তবে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে জীবনধারার পরিবর্তন, সঠিক পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাবার এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠা যায়। তবে যদি আপনার শিশু টাইপ ২ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে রস, সোডা এবং অন্যান্য শর্করা জাতীয় পানীয়, চিপস, কুকিজ এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস, সাদা রুটি, ভাত, পাস্তা, ভাজা এবং জাঙ্ক ফুড, চর্বিযুক্ত মাংস বিশেষত রেড মিট, চর্বি দুগ্ধজাত পণ্য এই সব খাবার থেকে দূরে রাখবেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে তাহলে বাচ্চাদের কতটা পরিমাণ শর্করা গ্রহণ করা প্রয়োজন। বাচ্চারা যে পরিমাণ চিনি খায় তা সময়ের সঙ্গে রক্তে শর্করার বড় স্পাইকের দিকে পরিচালিত হয়। এটি ইনসুলিন প্রতিরোধ, প্রিডায়াবেটিস এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে অতিরিক্ত চিনি আপনার সন্তানের মেজাজ, ক্রিয়াকলাপ এবং অতি সক্রিয়তাকেও প্রভাবিত করতে পারে। কারণ রক্তে শর্করা একটি রোলার কোস্টারের মত কাজ করে। কিন্তু ভুলে যাবেন না যে সমস্ত শর্করা সমান ভাবে তৈরি হয় না। শিশুদের বিকাশের জন্য সব ধরনের খাবারই প্রয়োজন। ফল, শস্য জাতীয় খাদ্য, মটরশুটি এবং দুগ্ধজাত পণ্যতেও শর্করা থাকে কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে এই খাদ্যগুলিই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং বিকাশে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন: করোনায় সুস্থ হওয়ার পর কম বয়সি ও শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যাচ্ছে হৃদরোগের সমস্যা?

Next Article