খাবার হজম করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে গলব্লাডারের। গলব্লাডার যকৃত থেকে নির্গত পিত্ত সঞ্চয় করে, তারপর হজমের জন্য অন্ত্রে পাঠায়। অন্ত্রে এই পিত্তরস খাবারের সঙ্গে মিশে খাবারকে চর্বি এবং খাদ্যে ভেঙে দেয়। এরপর শরীর তা শোষণ করে। আর তাই গলব্লাডারে কোনও সমস্যা হলে তখন হজম করতে কষ্ট হয়। আর এই গ্লব্লাডারের সমস্যা যদি দিনের পর দিন শরীরে চাপা থেকে যায় তাহলে সেখান থেকে ক্যানসার হবারও সম্ভাবনা থেকে যায়। পিত্তথলিতে পাথর হলে শুধুমাত্র ওষুধেই যে কাজ হয়ে যায় এমন নয়। অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। গলব্লাডারে যদি পাথর হয় তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তিনি যে ভাবে পরামর্শ দেবেন সেই ভাবেই চলুন। এছাড়াও সুস্থ থাকতে নিজে যা কিছু অবশ্যই মেনে চলবেন-
গলব্লাডারে পাথর হলে তার বিশেষ লক্ষণ থাকে না। তবে এই সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে।
উপরের ডানদিকে পেটে তীব্র ব্যথা হলে
স্তন আর পেটের মধ্যবর্তী স্থানের হাড়ে তীব্র ব্যথা হলে
ডান কাঁধে ব্যথা হলে
কাঁধ আর পিঠের মধ্যবর্তী স্থানে ব্যথা হলে
প্রায়শই বমি হলে
প্রায়শই গ্যাস, অম্বল, বমি হলে
খেতে ইচ্ছে না করলে
পিত্তথলিতে দিনের পর দিন যদি পিত্ত জমতে শুরু করে তাহলে গলব্লাডারে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে পাথর তৈরি হয়। একই সঙ্গে কিছু খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে-
রোজকার খাবারের মধ্যে অবশ্যই গোটা শস্য রাখতে হবে। ওটস, কর্নফ্লেক্স, ডালিয়া এসব বেশি করে খান। এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও গোটাশস্য বেশি পরিমাণে খেলে হার্টও ঠিক থাকবে। ফাইবার আমাদের হজমে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে শরীরে অতিরিক্ত পিত্ত জমবে না।
ওজন বাড়লে পিত্তথলিতে পাথর হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়াও অন্য কারণেও পাথর হতে পারে। তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে অতিরিক্ত ওজন থাকলে সেখান থেকে গলব্লাডার স্টোনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অতিরিক্ত চর্বি জমলে গলব্লাডার আয়তনে বড় হয়ে যায়। ফলে তখন তা ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে। সেখান থেকে পাথর হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
তাই রোজ বেশি করে ফল, সবজি খেতে হবে। বিশেষত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল বেশি করে খান। এতে পাথর হবার সম্ভাবনা কমে। আর ভাজা খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন। যে কোনও ভাজা খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। যা থেকে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। যাঁরা নিয়মিত ফাস্ট ফুড, তেলেভাজা খান তাঁদের পিত্তথলিতে পাথরের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।