মুখের ত্বকের, শরীরের অন্যান্য অংশের যেমন যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, তেমনি চোখেরও দেখভাল (Eye Health) করা অবশ্যই জরুরি। কারণ চোখের মতো স্পর্শকাতর অঙ্গ আর কিছু নেই। বর্তমানে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, আইপ্যাড, মোবাইলে মাথা গুঁজে থাকার ফলে শিশু থেকে প্রবীণ সকলেরই চোখের সমস্যা (Eyesight Problems) বেড়ে গিয়েছে। স্ক্রিন টাইম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় চোখের দৃষ্টিশক্তিতে (Eyesight) প্রভাব পড়ছে অনেকটাই। চোখের উপর ক্রমাগত চাপ ও স্ক্রিনটাইম বেড়ে যাওয়ায় চোখের উপর চাপ পড়ছে, যার ফলে চোখের সামনে ঝাপসা দেখেন অনেকেই। সাধারণত, চোখ হল বাইরের বিশ্বের জানালা। চোখ বন্ধ থাকলে পৃথিবীর সবকিছুই অন্ধকার মনে হবে। শরীরের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ইন্দ্রিয়েরও তাই যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। আয়ুর্বেদিক ওষুধ ও চিকিৎসা দৃষ্টিশক্তিকে সঠিক ও উন্নত করতে পারে। আয়ুর্বেদিক উপায়ে চোখের যত্নের জন্য নেওয়া একটি ভাল বিকল্প পদ্ধতি। চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ উপায় রয়েছে যা সকলেরই জানা অবশ্যই দরকার। সেগুলি কী কী, তা একনজরে জেনে নিন…
ত্রিফলা
দিনে দুবার ত্রিফলা জল দিয়ে চোখ ধুলে আরাম যেমন পাবেন তেমনি দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক থাকে। ত্রিফলা আইওয়াশ চোখের যত্নের জন্য একটি কার্যকরী চিকিত্সা। দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতে অবিশ্বাস্যভাবে মাধ্যম একটি। ড্রাই আই, কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম, ছানি এবং গ্লুকোমা এড়াতেও এই ভেষজ পদ্ধতি মেনে চলা সম্ভব।
আনাগ্রাম
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ঘুমানোর আগে গরুর দুধ দিয়ে তৈরি ঘি দিয়ে পা বারবার মালিশ করতে ভুলবেন না। আয়ুর্বেদের এই অনুশীলন সপ্তাহে তিনবার করলে উপকার পাবেন।
ত্রাতাক কর্ম
ত্রাতাক কর্ম হল অন্ধকার ঘরে একটি মোমবাতির সামনে ধ্যানের ভঙ্গিতে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা। এই একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অল্প সময়ের জন্য একটি ছোট বিন্দুর দিকেতাকিয়ে থাকতে হবে। প্রাচীন আয়ুর্বেদিক গ্রন্থ অনুসারে, চোখের অলসতা কমিয়ে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে ত্রতাক পদ্ধতি খুবই কার্যকরী। ভাল ফলাফলের জন্য ত্রাতাক চিকিত্সা শুরু করার আগে চোখের ব্যায়াম করা আবশ্যিক। চোখের গোলাকার মণি দুটি একসঙ্গে উপরে এবং নীচে, বাম এবং ডানদিকে সরিয়ে ব্যায়াম করা উচিত। ত্রাতাক পদ্ধতির পর গোলাপজল বা ত্রিফলা জল দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে। ত্রাতক চিকিৎসা করার সময় যদি চোখের জল পড়তে শুরু করে, তবে একই সময়ে তা বন্ধ করুন কিন্তু পরের দিন আবার চেষ্টা করুন।
খাদ্যাভাস
ভালো দৃষ্টিশক্তির জন্য, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, প্রচুর ফল ও সবজি যেমন পালং শাক, মেথি পাতা, সবুজ শাক-সবজি, বাথুয়া পাতা প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন। নিয়মিত নুন খাওয়া এড়িয়ে চলুন। সাধারণ নুনের বদলে খাদ্যে রক সল্ট মিশিয়ে খেতে পারেন। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে আপনার খাদ্যাভ্যাসও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমলা
আমলা ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি চোখের রেটিনার কার্যকারিতা শক্তিশালী করার জন্য খুব কার্যকর। প্রতিদিন ২ থেকে ৫ টেবিলস্পুন আমলকির রস গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর হয়। স্বাস্থ্যকর চোখের জন্য এই মিশ্রণ প্রতিদিন খাওয়ার পরামর্শ দেন চক্ষুবিশারদরা।
বাদাম, কালো গোলমরিচ ও মধু
যাদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল, প্রায়ই চোখে ঝাপসা দেখেন, তারা এই মিশ্রণ গ্রহণ করে অনেক উপকার পেতে পারেন। সকালে ৪-৫টি বাদাম ভেজানো, ২-৪টি কালো গোলমরিচ এবং এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর অন্যতম মোক্ষম ওষুধ।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)