বর্ষবরণের রাতে দেদার খানাপিনা চলেছে। সঙ্গে মদ্যপানও করেছেন। জমিয়ে আনন্দ করেছেন ঠিকই। তার সঙ্গে চাপ পড়েছে আপনার লিভারের উপর। যত দিন যাচ্ছে, ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়ছে। তার সঙ্গে লিভারের আরও রোগ জাঁকিয়ে বসছে। বাইরের খাবার খাওয়ার প্রতি প্রবণতা, মদ্যপান, শরীরচর্চার প্রতি অনীহা এবং অনিয়মিত জীবনযাত্রাই লিভারের রোগ ডেকে আনে। কিন্তু এই অঙ্গই আমাদের দেহে ডিটক্সিফিকেশন থেকে পুষ্টি সঞ্চয়ের মতো একাধিক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আজকাল অজান্তেই ফ্যাটি লিভার বাসা বাঁধছে শরীরে। প্রাথমিক পর্যায়ে তা ধরা পড়ছে না। পাশাপাশি জন্ডিসের মতো লিভারের রোগও প্রায়শই দেখা যায়। চোখ ও ত্বক হলদে হওয়া যাওয়া, বিলিরুবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলোই জন্ডিসের। অন্যদিকে, আপনার লিভার যদি ঠিকমতো কাজ না করে, তখন মেটাবলিক ফাংশনেও গোলমাল দেখা দেয়। হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তির মতো লক্ষণগুলো হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। আপনার পেটের উপরের ডান দিকে যদি অস্বাভাবিক ব্যথা হয়, তাহলে বুঝবেন লিভারে প্রদাহ তৈরি হয়েছে। গাঢ় রঙের প্রস্রাব ও মলত্যাগেও যদি কোনও জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। দীর্ঘদিন ধরে প্রদাহ হতে থাকলে এখান থেকে লিভার ফেলিয়রের ঝুঁকি বাড়ে। তাই নতুন বছরে লিভারের যত্ন নিন। জীবনযাত্রায় ছোট্ট বদল এনে আপনি লিভারের দেখভাল করতে পারেন।
ডায়েটে যে সব বদল আনবেন-
১) আপনার পাতে তাজা ফল ও সবজি রাখা জরুরি। বিভিন্ন বেরি, লেবুজাতীয় ফল বেশি করে খান। এই ধরনের ফলে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা লিভারে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করে দেবে এবং শারীরিক প্রদাহ কমাবে। পাশাপাশি শাকপাতা ও ব্রকোলি, বাঁধাকপির মতো সবজি খান।
২) তাজা শাকসবজি ও ফলের পাশাপাশি শুকনো ফল, বাদাম ও বীজ রাখুন। তার সঙ্গে গোটা শস্য ও ডাল খান। চর্বিযুক্ত খাবারও জরুরি। তবে, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে এমন খাবার খান। এক্ষেত্রে আপনি অলিভ অয়েল, মাছের তেল, বাদাম, অ্যাভোকাডো খেতে পারেন।
৩) লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য হাইড্রেশন জরুরি। তাই প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। জল লিভারের কার্যকারিতাকে বজায় রাখতে এবং শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি যে সব খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি এবং ময়দা দিয়ে যে সব খাবার তৈরি হয়, সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
জীবনধারায় যে সব বদল আনবেন-
১) প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট শরীরচর্চা করুন। প্রতিদিন যোগব্যায়াম করলে ফ্যাট ও ক্যালোরি পোড়ানো সহজ হয়। এতে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি সহজেই এড়ানো যায়।
২) মাঝেমধ্যে এক-আধবার মদ্যপান লিভারের জন্য খুব একটা ক্ষতিকারক নয়। কিন্তু ওই একদিনও মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান করলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। আর যদি নিয়মিত মদ্যপান করেন, তা অবশ্যই অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। তা মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন।