ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে ব্যথা ও খিঁচুনি খুব সাধারণ। কিশোর বয়সে মেয়েদের মধ্যে ঋতুস্রাব চলাকালীন তীব্র পেটের যন্ত্রণা হয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা কমতে থাকে। আবার কারও মধ্যে একটু হেরফের হয় না ব্যথার। পিসিওডি ও পিসিওএস-এর সমস্যার জন্যও ঋতুস্রাব চলাকালীন তলপেটের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় অনেক মহিলাকে। শুধু পেটের যন্ত্রণা নয়। তার সঙ্গে বমি, ডায়ারিয়ার উপসর্গও দেখা দেয়। ডাক্তারি ভাষায় একে ডিসমেনোরিয়া বলে। প্রায় ৫০ শতাংশেরও বেশি মহিলা ঋতুস্রাবের সময় এই ডিসমেনোরিয়ায় ভোগেন। কারও ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে থেকেই পেটের যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায়। আবার কারও ঋতুস্রাব শুরুর প্রথম দিন তীব্র পেটের যন্ত্রণা হয়। কারও ক্ষেত্রে এই ব্যথার তীব্রতা কম থাকে, আবার কারও বেশি হয়। এই যন্ত্রণা কে সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা যায় না। তবে, ব্যথা তীব্রতা কমাতে আপনি ঘরোয়া প্রতিকারের সাহায্য নিতে পারেন। পাশাপাশি রুখে দিতে পারবেন ঋতুস্রাবের সময় হওয়া নানা শারীরিক সমস্যা।
১) গুড়- ঋতুস্রাবের সময় শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে যায়। এতে নারীদেহ দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় গুড় খেলে আপনার শারীরিক ক্লান্তি কমতে পারে। ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ কেমিক্যালের মতে, গুড়ের মধ্যে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে। এছাড়া গুড়ের মধ্যে রয়েছে প্রদাহবিরোধী উপাদান। ঋতুস্রাবের সময় অল্প পরিমাণ গুড় খেলে যেমন আপনার পেটের যন্ত্রণা কমবে, তেমনই মুড সুইং, পায়ে ও কোমরের যন্ত্রণাকে সহজেই এড়ানো যাবে।
২) হিটিং প্যাড- অত্যধিক পরিমাণে তলপেটে যন্ত্রণা হলে, ঋতুস্রাবের সময় আপনি গরম সেঁক দিতে পারেন। হিটিং প্যাড ব্যবহার করে গরম সেঁক দিতে পারেন। কিংবা হট ওয়াটার ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। পেইন কিলার খাওয়ার চেয়ে এটি অনেক বেশি কার্যকর উপায়। গরম সেঁক দিলে পেশির সংকোচন শিথিল হয়ে যায়। এতে যন্ত্রণা থেকে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া যায়।
৩) মালিশ- ন্যাশানাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তলপেটে হালকা তেল মালিশ করলে যন্ত্রণা থেকে আরাম পাওয়া যায়। একইভাবে, আপনি কোমর ও পায়েও গরম তেল মালিশ করতে পারেন। তবে, তেল খুব বেশি তেল গরম করবেন না। পাশাপাশি খুব বেশি চাপ দিয়েও মালিশ করবেন না।
৪) ডায়েটের দিকে নজর দিন- গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডায়েটে ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখলে ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে যন্ত্রণা, পায়ে ও কোমরে ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি এড়ানো যায়। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে আমন্ড, টক দই, পিনাট বাটার, পালং শাক ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে মুড সুইংও এড়াতে পারবেন।
৫) ভেষজ উপাদান- এমন বেশ কিছু মশলা ও ভেষজ উপাদান রয়েছে, যা ঋতুস্রাব চলাকালীন তলপেটে যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। মৌরি, আদা, দারুচিনির মতো উপাদানে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা পেশির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়।