রক্ত জমাট বাঁধা (Blood Clot) বা ভেনাস থ্রম্বোইম্বোলিজম ক্ষত নিরাময়ের জন্য এবং শরীর থেকে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। শরীরে রক্ত জমাট না বাঁধলে তাও যেমন বিপজ্জনক তেমনই হঠাৎ করে কোথাও রক্ত জমাট বেঁধে গেলে তাও কিন্তু ক্ষতিকারক। বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই রক্তজমাট বেঁধে মৃত্যুর ঘটনা সবচাইতে বেশি আমেরিকায়। আর তাই শরীরের এই রক্ততঞ্চন প্রক্রিয়া ঠিক আছে কিনা, সেদিকে কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে আমাদেরই। কোভিডের সময়ে অনেকের ক্ষেত্রেই এই রক্ত জমাট বাঁধার মত সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কারণ শরীরে যদি কোনও ক্ষত বা প্রদাহজনিত সমস্যা থাকে সেখান থেকেও কিন্তু এই সমস্যা হয়।
কোভিডের প্রভাব
যাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের অনেকের মধ্যেই কিন্তু এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কারণ করোনার সংক্রমণের ফলে শরীরের অভ্যন্তরে অজান্তেই অনেক রকম ক্ষতি হয়েছিল। এছাড়াও ভাইরাসের প্রকোপে যে প্রদাহের সৃষ্টি হয়েছিল সেখান থেকেও কিন্তু আসে এই রক্তজমাট বাঁধার মত সমস্যা। আর তাই কোভিডে আক্রান্ত হলে কিন্তু এই ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে থাকুন। রক্ত যাতে কোনও ভাবেই শরীরে জমাট না বেঁধে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। একবার রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করলেই কিন্তু পরিস্থিতি জটিলতার দিকে যায়।
সার্জারি
অস্ত্রোপচারের পরও কিন্তু অনেকের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। কারণ কোনও অপারেশনের পর অনেকেই নিজে থেকে তাঁর মুভমেন্ট কমিয়ে দেয়। পরিবর্তে একটানা এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকেন। আর এতে কিন্তু রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই। আর তাই অপারেশনের পরও একই ভাবে পরিশ্রম করতে হবে। প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। অস্ত্রোপচারের পর যদি প্রয়োজন মত শরীরের নাড়াচাড়া না করেন, শরীরচর্চা না করেন তাহলে কিন্তু রক্ত জমাট বাঁধতে বাধ্য। যে কারণে চিকিৎসকরা সব সময় অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়ে শরীর নাড়াচাড়ার কথা বলেন। এতে পালমোনারি এমবোলিজমের সমস্যা বা ঝুঁকি কমে।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা
একটানা একই জায়গায় বসে কাজ করলে সেখান থেকেও কিন্তু আসে রক্তজমাট বাঁধার মত সমস্যা। যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিটার, ল্যাপটপের সামনে বসে থাকেন, বা বসে বসে গাড়ি চালান, যাঁরা পাইলট তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা কিন্তু সবচেয়ে বেশি। একটানা বসে থাকার ফলে পেশির কোনও রকম মুভমেন্ট থাকে না। ফলে রক্ত জমাট বাঁধার মত সমস্যা সহজেই কাবু করে ফেলে। যে কারণে সকলকেই বলা হয় কাজের মাঝে উঠে একটু ঘোরাফেরা করতে। একটানা বসে কাজ করলে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ছাড়াও কিন্তু একাধিক সমস্যা আসে।
স্ট্রেস এবং উদ্বেগ
অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে কিন্তু সেখান থেকেও রক্ত জমাট বাঁধার মত সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত কাজের চাপ বা উদ্বেগের মধ্যে থাকলে অনেকেই ধূমপান করেন। আর সেখান থেকে যেমন হার্ট বা ফুসফুসের সমস্যা আসে তেমনই কিন্তু আসে রক্ত জমাট বাঁধার মত সমস্যাও। তাই ধূমপান একেবারেই বাদ দিতে হবে। কারণ রক্ত জমাট বাঁধার মত সমস্যা এবং হার্টের সমস্যা একসঙ্গে হলে তা শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।