কালোজিরে। রান্নার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। মশলা হিসেবে তরকারি, ঝোল, অম্বলে ব্যবহার হয় এই ফোড়ন। এর স্বাস্থ্যগুণ অপরিসীম। এটি আদতে একটি মৌসুমী গাছ, একবার ফুল ও ফল হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nigella Sativa Linn। এর স্ত্রী, পুরুষ দুই ধরনের ফুল হয়, রং সাধারণত হয় নীলচে সাদা। পাঁচটি পাঁপড়ি বিশিষ্ট। তিন-কোনা আকৃতির কালো রঙের বীজ হয়। গোলাকার ফল হয় এবং প্রতিটি ফলে ২০-২৫ টি বীজ থাকে।
কালোজিরের মধ্যে ফসফেট, লোহা এবং ফসফরাস থাকে। এ ছাড়াও রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধক কেরাটিন। শুধু ক্যানসার নয়, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান রয়েছে ছোট্ট এই মশলার মধ্যে। কালোজিরে নিয়মিত রান্নায় খেলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
প্রতি গ্রাম কালোজিরের পুষ্টি উপাদান হল- প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি১ ১৫ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম, কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম, জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম। হার্টের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কালোজিরে অত্যন্ত উপকারি। পাশাপাশি বাতের ব্যথায় কালোজিরের তেল ব্যবহারের পরামর্শ দেন বহু চিকিৎসক। কালোজিরের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-মাইকোটিক প্রভাব রয়েছে।
ডায়াবেটিস একটি বিপজ্জনক রোগ। কালোজিরের তেল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। সর্দি-কাশিতে আরাম পেতে, এক চা চামচ কালোজিরের তেলের সঙ্গে এক চা চামচ মধু বা এক কাপ লাল চায়ের সঙ্গে আধ চা চামচ কালোজিরের তেল মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এক চা-চামচ কালোজিরের সঙ্গে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা-চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশি কমে।
লেবুর রস ও কালোজিরের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। এই দুই উপাদান মিশিয়ে দিনে দু’বার মুখে লাগান। ত্বকে ব্রণ ও অবাঞ্ছিত দাগ হালকা যাবে। তবে কালোজিরে নিয়মিত ও পরিমিত খেতে হবে। অতিরিক্ত খেলে বা ব্যবহার করলে ফল ভাল নাও হতে পারে।
আরও পড়ুন, ইমিউনিটি বাড়াতে বিভিন্ন বয়সে পোস্ট-করোনা ডায়েট কতটা জরুরি?