দক্ষিণ ভারতের বেশিরভাগ খাবারে কারিপাতার আধিক্য থাকলেও বাঙালি ডাল, আলুভাজা থেকে চানাচুরে বিশেষ ব্যবহার রয়েছে এই কারিপাতার। শুধুই যে সুগন্ধের জন্য রান্নায় কারিপাতা ব্যবহার করা হয় তা নয়, এই পাতার অনেক উপকারিতাও রয়েছে। সেই প্রাচীন কাল থেকেই স্বাস্থ্য রক্ষায় বিভিন্ন পাতা ব্যবহার করা হচ্ছে। তালিকায় তেজপাতা, ধনেপাতা, পুদিনা, থানকুনি, অশ্বগন্ধা একাধিক পাতা রয়েছে। কারিপাতার মধ্যে রয়েছে ভালো পরিমাণে ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ইত্যাদি। এক্ষেত্রে পেট ভালো রাখা থেকে শুরু করে ওজম কমাতেও সাহায্য করে কারিপাতা। কারিপাতা দিয়ে চা বানিয়ে খান অনেকেই। এছাড়াও কারিপাতা শুকনো করে গুঁড়ো করে রাখলে অনেকদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়।
ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, আয়রনে ভরপুর কারিপাতা। তাই পেট ভাল রাখা থেকে হজম করানো একাধিক ভূমিকা রয়েছে কারিপাতার। অনেকেরই সকালে ঘুম থেকে উঠে গা গুলোয়, বমি উঠে আসে। এই সমস্যা মূলত ফ্যাটি লিভার বা লিভারের কোনও সমস্যার জন্য হয়। এক্ষেত্রে কারিপাতা খেতে পারলে উপকার পেতে পারেন। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে, স্ট্রেস কমাতে, ত্বের জ্বালাপোড়া ভাব কমাতেও কিন্তু ব্যবহার করা হয় কারিপাতা।
এছাড়াও এই পাতার আরও যা যা উপকারিতা রয়েছে-
লিভারের সমস্যায় এবং বমি ভাব কাটাতে- খাবার ঠিকমতো হজম না হলে কিংবা দুটো খাবারের মধ্যে যদি গ্যাপ বেশি হয়ে যায় তাহলে সেখান থেকেও একাধিক শারীরিক সমস্যা আসতে পারে। জোর করে বমি করতে মানা করছেন চিকিৎসকেরা। এতে শরীরের ক্ষতি বেশি হয়। আর তাই খেতে পারেন কারিপাতা। সকালে ঘুম থেকে উঠে ৮-১০ টা কারিপাতা একসঙ্গে পিসে রস বের করে নিন। এবার ওর মধ্যে একটু লেবুর রস আর মিছরি দিয়ে খান। এতে হজম ভাল হবে। সেই সঙ্গে দূর হবে এই গা-বমি ভাবও। এছাড়াও ডাল বা আলুভাজায় ফোড়ন হিসেবে দিতে পারেন কারিপাতা। এতে মুখের স্বাদ পরিবর্তিত হবে, খেতেও ভাল লাগবে।
ওজন কমাতে- কারিপাতার মধ্যে থাকে কার্বোজোল, অ্যালকালয়ে়ডস। এই দুই উপাদান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে ওজন কমাতেও সাহায্য করে কারিপাতা। এই কারিপাতা খাওয়ার পাশাপাশি যদি নিয়ম করে শরীরচর্চা করতে পারেন তাহলে উপকার পাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার সমস্যা- পেটের যে কোনও সমস্যাতেও ভাল কাজ করে কারিপাতা। কারিপাতা শুকিয়ে কিংবা কাঁচা অবস্থা- যে কোনও ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। খালিপেটে যদি তিন থেকে চারটে কারিপাতা চিবিয়ে খেয়ে একগ্লাস ইষদুষ্ণ জল খেতে পারেন তাহলেও উপকার পাবেন। এতে শরীরের এনজাইমগুলো ঠিক করে কাজ করে।
ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সমস্যায়- বর্ষায় যে কোনও ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। বেশিরভাগ অসুস্থতার নেপথ্যে থাকে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। কারিপাতার মধ্যে থাকে কার্বোজল ও অ্যালকালয়েডস। যা অ্যান্টি-ক্যানসার এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হসেবে কাজ করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভূমিকা রয়েছে এই পাতার। তা একাধিক পরীক্ষার দ্বারা প্রমাণিত। সরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে প্যাংক্রিয়াসকে ৭তির হাত থেকে রক্ষা করে। কারিপাতার মধ্যে যে তামা, আয়রন, জিঙ্ক রয়েছে তাই আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।