বসন্তের হাওয়ার মধ্যেই লুকিয়ে রোগের জীবাণু। এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন সর্দি-কাশির সমস্যা লেগে রয়েছে। তার উপর এই ঋতুতেই সবচেয়ে বেশি বসন্ত রোগ অর্থাৎ চিকেন পক্সের ঝুঁকি থাকে। অন্যদিকে, অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপের কারণে শিশুদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে, এমন নয় যে আপনি বসন্তের রোগের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন না। আয়ুর্বেদে এমন অনেক ভেষজ উপাদানের উল্লেখ রয়েছে, যার উপকারিতা সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানেন। এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান হল কালমেঘ। এই আয়ুর্বেদিক উপাদানটি বসন্তে আপনাকে রোগের হাত থেকে রক্ষা করবে।
সাধারণ জ্বর, সর্দির সমস্যা থেকে শুরু করে পেটের সমস্যা এবং আরও অন্যান্য রোগের হাত থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে কালমেঘ। স্বাদে তেঁতো হলেও কালমেঘের স্বাস্থ্যগুণের জন্যই এর ব্যাপক চাহিদা। কালমেঘ খেলে কী-কী উপকারিতা পাওয়া যায়, চলুন জেনে নেওয়া যাক-
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে-
যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন কিংবা প্রি-ডায়াবেটিস পিরিয়ডে রয়েছেন, তাঁদের জন্য ভীষণ উপকারী কালমেঘ। এমনকী টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও কার্যকর প্রভাব ফেলে কালমেঘ। কালমেঘে এমন উপাদান রয়েছে যা শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
লিভার থেকে দূষিত পদার্থ দূরে করে-
জীবনধারা এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়ছে। লিভারের চর্বি জমলে এই সমস্যা দেখা দেয়। আবার লিভারে দূষিত পদার্থ জমলে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। কালমেঘ খেলে লিভার সম্পর্কিত সমস্ত সমস্যা দূর হয়ে যায়। কালমেঘ পাতার রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা লিভার সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। হেপাটাইটিস-বি এর ঝুঁকি কমাতে কার্যকর কালমেঘ।
মানসিক চাপ দূর করে-
বর্তমানের জীবনধারা মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে। জীবনে স্ট্রেস যে হারে বাড়ছে তাতে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ছে। এই অবস্থায় কালমেঘ খেলে আপনি মানসিক চাপ কমাতে পারেন। কালমেঘ পাতার রস স্নায়ুর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
সর্দি- কাশির সমস্যা দূর করে-
আবহাওয়া একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভোগেন? একটু কিছু হলেই ঠান্ডা লেগে যায়। হতে পারে আপনার কোল্ড অ্যালার্জি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকর। কালমেঘের পাতার মধ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং ইমিউনোমোডুলেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সর্দি-কাশির সমস্যা থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করে। গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো উপসর্গ থেকে রেহাই দেয়।
ত্বক পরিষ্কার রাখে-
অনেক সময় রক্তে দূষিত পদার্থ জমলে ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, প্রদাহ, দাগের সমস্যা দেখা দেয়। এই অবস্থায় কালমেঘ খেলে উপকার পেতে পারেন। কালমেঘ শরীর থেকে সমস্ত দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং আপনাকে নিখুঁত ত্বক প্রদান করে। তাছাড়া এই ভেষজের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।