তুলসি পাতার প্রচুর গুণ। প্রাচীন কাল থেকেই একাধিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তুলসি পাতা। রোজকার পুজোতে ব্যবহার করা হয়, আর্য়ুবেদ ওষুধ তারিতে ব্যবহার করা হয়, ছোট বাচ্চাদের সর্দি-কাশি রুখতে নিয়মিত তুলসি পাতা খাওয়ানো হয়। এছাড়াও ডায়াবেটিস রুখতে এবং ওজন কমাতেও কিন্তু ব্যবহার রয়েছে তুলসি পাতার। পুজোর সময় অন্যান্য সব সামগ্রীর পাশাপাশি তুলসি পাতার গুরুত্ব কিন্তু সর্বাধিক। তুলসি পাতা ছাড়া পুজো সম্পন্নই হবে না। নারায়ণের ভীষণ প্রিয় এই পাতা। যে কারণে হিন্দু ধর্মশাস্ত্র থেকে আর্য়ুবেদ- এই পাতার এত গুণ। লক্ষ্মীর অপর ন্মও কিন্তু তুলসি। আর তাই বলা হয় তুলসি পাতা চিবিয়ে খেতে নেই। এতে নাকি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। হতে পারে অমঙ্গলও। বরং তুলসি পাতা জলে ফেললেই তার নির্যাস সবচেয়ে ভাল পাওয়া যায়- এমনটাই কিন্তু মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তুলসি পাতা কিন্তু অবশ্যই ধুয়ে খাবেন।
কেন এই পাতা চিবোতে মানা করা হয়?
লক্ষ্মীর উপস্থিতি আছে বলেই যে তুলসি পাতা চিবিয়ে খেতে হবে এরকম কিন্তু একেবারেই নয়। এর পিছনে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। বিজ্ঞান বলছে, তুলসি পাতায় পারদ ও আয়রনের মাত্রা অনেকটা পরিমাণে বেশি থাকে। এই পাতা চিবোলে দাঁতের মধ্যে ছোপ পড়তে পারে। কারণ তুলসি পাতায় সামান্য কিছু পরিমাণে অ্যাসি়ডও থাকে। এতে দাঁতের অ্যানামেল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তুলসি পাতায় কিছুটা পরিমাণ আর্সেনিকও থাকে। এই সব কারণে কিন্তু দাঁত সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কী ভাবে তুলসি পাতা খেলে উপকার পাবেন?
রোজ সকালে খালিপেটে তুলসি পাতা ভেজানো জল খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও এককাপ জল সসপ্যানে চাপিয়ে তার মধ্যে তুলসি পাতা ফেলে দিন। এবার ওর মধ্যে দারচিনি, আদা, চা পাতা দিন। এই চা খেতে পারলে কিন্তু সুগার থাকবে নিয়ন্ত্রণে। আর শরীরের যে কোনও সংক্রমণ থাকলে কিন্তু সেক্ষেত্রেও উপকারে আসে এই তুলসির চা।
আবার গরম জলে তুলসি পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে ছেঁকে খান মধুর সঙ্গে। এভাবে খেতে পারলে বুকের মধ্যে কফ জমলে তার থেকে আরাম পাবেন।
তুলসি পাতা কয়েকদিন রোদে ফেলে শুকনো করে রাখুন। এবার সেই পাতা গুঁড়ো করে নিয়ে ঘি-এর সঙ্গে মিশিয়ে খান। এতে শরীরের অনেক পুরনো রোগ কিন্তু সেরে যায়। আর্য়ুবেদ মতে বহু বছর ধরে এভাবে তুলসি পাতা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।
গরমের দিনে স্নানের জলেও ফেলে দিন কয়েকটা তুলসি পাতা। বা তুলসি পাতা দিয়ে ফোটান জল মিশিয়ে নিন বালতিতে। এতে দূর হবে ঘামের দুর্গন্ধ। তেমনই সংক্রমণের হাত থেকেও কিন্তু রেহাই পাবেন।