প্রতি বছর বর্ষা পড়লেই বাড়ে একাধিক রোগ জ্বালা। জ্বর এখন ঘরে ঘরে। সঙ্গে সর্দি-কাশি, পেটখারাপ, ডায়ারিয়া এসব তো আছেই। বর্ষায় ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাকের আক্রমণ বাড়ে। এই সময় সবচেয়ে বেশি প্রকোপ বাড়ে সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার। যে ব্যাকটেরিয়া টাইফয়েডের অন্যতম কারণ। এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে জ্বর আসে, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা থাকে। দূষিত খাবার, জল থেকে টাইফয়েড বেশি সংক্রমিত হয়। শরীরে ব্যথা, জ্বর, মাথা ব্যথা এসব থেকে শরীরে প্রথম টাইফয়েডের লক্ষণ দেখা যায়। সেই সঙ্গে খিদে মন্দা, ত্বকে ফুসকুড়ি, ত্বকে লাল ছোপ এসব সমস্যাও থাকে। তবে টাইফয়েড জ্বরের কারণ অনেক সময় কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব থেকেও হয়ে থাকে। তাই ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। কোথাও ময়লা, আবর্জনা বা জল জমতে দেবেন না। শরীরে কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেও দেরি করবেন না।
টাইফয়েড হলে জ্বর ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ওষুধ খেয়ে জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হতে পারে। আজকাল টাইফয়েডের টিকা পাওয়া যায়। যদিও সেই টিকার মেয়াদ ৩ বছর। বড়জোর ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। টাইফয়েডের এখন অনেক ওষুধ আছে। আছে চিকিৎসাও। তবে সময়মতো চিকিৎসা না হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। এছাড়াও জ্বর, পেটখারাপ হলেই প্রথম থেকে ভরসা রাখুন এই ঘরোয়া টোটকায়। পাশাপাশি ওষুধ তো আছেই।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে রসুন আমাদের শরীরে একাধিক উপকার করে। এর মধ্যে একটি হল টাইফয়েডের জ্বর নামাতে এই রসুন ভীষণ রকম কার্যকর। রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের রক্ত পরিষ্কার রাখে। সেই সঙ্গে কিডনি থেকে যাবতীয় টক্সিনও দূর করে দেয়। টাইফয়েড হলে রসুন ভাজা গরম ভাতে মেখে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও খালি পেটে দি কোয়া রসুনের সঙ্গে মধু মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। এতে বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
২০২১ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী টাইফয়েডে বেশ কার্যকরী তুলসিও। তুলসি জয়েন্টের ব্যথা, প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ভেষজ ওষুধ হিসেবে তুলসির উপকারিতা কারোর অজানা নয়। ম্যালেরিয়া থেকে টাইফয়েড নিরাময় হবে তুলসির জাদুতেই যদি খান এই ভাবে। জলের মধ্যে তুলসি পাতা আর গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে ভাল করে ফুটিয়ে নিন। এবার তা ছেঁকে নিয়ে মধু মিশিয়ে খান। তুলসির মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ধ্বংস করে দেয়।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারও খুব ভাল এই টাইফয়েডের ক্ষেত্রে। ভিনিগারের অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই দ্রুত জ্বর নামে। এছাড়াও এর মধ্যে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস গরম জলে মিশিয়ে খান অ্যাপেল সিডার ভিনিগার। শরীর সুস্থ থাকবেই। টাইফয়েড রোগীর হাত, পা, কপাল মাঝেমধ্যেই ঠান্ডা জলে কাপড় ভিজিয়ে মুছে দিন। এতে উপকার হবে।