থামছেই না মাঙ্কিপক্সের তাণ্ডব। করেনার মতই দ্রুত গতিতে তা ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ২৩ টি দেশে ছড়িয়েছে মাঙ্কিপক্সের আতঙ্ক। সরকারি হিসেব মতে ২৫৭ জন আক্রান্ত এই পক্সে। যাদের মধ্যে ১২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। উগ্বেগের বিষয় এটাই যে এখনও পর্যন্ত যে সব দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে সেই সব দেশে এই রোগের কোনও পূর্বইতিহাস নেই। অসুস্থ এবং শিশুরা যদি এই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হন তাহলেই বাড়বে জটিলতা। সংক্রমণ আরও মারাত্মক রূপ নেবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের এই পক্সে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণ বুঝতে পারা কিন্তু বেশ কষ্টকর। চিকেন পক্সের সঙ্গে মিল রয়েছে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গের।
কিন্তু কি এই মাঙ্কিপক্স (Monkeypox) ?
মাঙ্কিপক্স হল গুটিবসন্তের মতই একরকম ভাইরাস। ১৯৫৮ সালে প্রথম বানরের মধ্যে এই ভাইরাস দেখা গিয়েছিল। পরবর্তীকালে ১৯৭০-এ মানুষের সঙ্গে এই ভাইরাসের সংযোগ নিয়েও বিশেষ একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। প্রধানত মধ্য আর পশ্চিম আফ্রিকার রেইনফরেস্টে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা গেলেও বর্তমানে এই ভাইরাসই ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। এই ভাইরাস Poxviridae-পরিবারের অর্ন্তগত, চিকেনপক্স সংক্রমণেও কিন্তু এই ভাইরাসই দায়ী।
শিশুদের মধ্যে মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ
শিশুদের মধ্যে যদি কোনও আচরণগত পরিবর্তন আসে তাহলে প্রথমেই সাবধান হতে হবে। কোনও অস্বাভাবিক উপসর্গ থাকলে সতর্ক হন। মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ সহজে শনাক্ত করা যায় না। আর তাই যে সমস্ত প্রাথমিক লক্ষণগুলো দেখলে অবশ্যই সতর্ক হবেন-
জ্বর ( যেমনই তাপমাত্রা হোক না কেন)
শরীরে কোনও রকম অ্যালার্জি
শরীরে ব্যথা
অতিরিক্ত ক্লান্তি
জয়েন্ট ফুলে যাওয়া
মাঙ্কিপক্স থেকে বাঁচার উপায়
বাচ্চাদের হাত, পা বার বার ধুয়ে দিন। কোভিডের সংক্রমণ এড়াতে যে রকম সতর্কতা নিয়েছিলেন সেই ভাবেই চলতে হবে। বাচ্চারা বার বার হাত মুখে দেয়। আর তাই হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে রাখা খুব জরুরি।
স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
কোনও পশু যদি বাড়িতে থাকে তাহলে সতর্ক থাকবেন। পশুদের থেকেও কিন্তু সংক্রমণ ছড়ায়।
মাংস খুব ভালভাবে ধুয়ে রান্না করুন। হাফসিদ্ধ মাংস খাবেন না।
কোনও ব্যক্তির জ্বর বা হঠাৎ করে কোনও র্যাশের সমস্যা হলে তা এড়িয়ে চলুন। অসুস্থ ব্যক্তির ব্যবহার করা থালা, বাটি, ব্রাশ, টাওয়েল ব্যবহার করবেন না। একই কাপে চা খাবেন না।
কী ভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস
মাঙ্কিপক্স সংক্রামিত ব্যক্তি বা প্রাণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়াও ভাইরাস দ্বারা দূষিত কোনও পদার্থের মাধ্যমেও কিন্তু ছড়াতে পারে। ইঁদুর, কাঠবিড়ালির মতো প্রাণীর মাধ্যমেও কিন্তু ছড়াতে পারে। মাঙ্কিপক্স বিভিন্ন ক্ষত, শ্বাসকষ্ট, কাশি, সর্দি ও শরীরের দূর্ষিত বর্জ্যের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।