শরীর সামান্য বিগড়োলেই সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে হয় চিকিৎসকদের কাছে। সারিয়ে তুলতে ভরসা তাঁরাই। যে কোনও চিকিৎসকের ধ্যান-জ্ঞান তাঁর রোগীরাই। রোগীকে সুস্থ করে তুলতে তাঁরা সদা তৎপর। সারাদিন ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটে তাঁদের। নিজের জন্য এবং পরিবারের জন্য খুবই কম সময় থাকে তাঁদের হাতে। দিনের শেষে তাঁরাও মানুষ। তাঁদেরও শরীরের যথাযথ যত্নের প্রয়োজন হয়। নিজে সুস্থ না থাকলে কী করেই বা অন্যদের ভাল রাখবেন তাঁরা। নিয়ম মেনে না চললে আর পাঁচজনের মত তাঁদেরও পড়তে হয় ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের চক্করে। এছাড়াও চিকিৎসকদের মধ্যে হৃদরোগের সম্ভাবনাও সবচাইতে বেশি থাকে। সুস্থ থাকতে কী কী মেনে চলেন চিকিৎসকেরা?
চিকিৎসকেরা নিজেরাই বলছেন রোজ শরীরচর্চা ভীষণ রকম জরুরি। নিয়ম মেনে শরীরচর্চা না করলেই বাড়বে হৃদরোগের ঝুঁকি। এদিকে ডাক্তারদের জীবনেই স্ট্রেস কিন্তু সবচাইতে বেশি। স্কুল জীবনে সকলেই খেলাধূলোর মধ্যে থাকেন। পরবর্তীতে লেখাপড়ার চাপ এতটাই বেশি থাকে যে অন্য কোনও দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ থাকে না। সঙ্গে কেরিয়ারের চাপ তো থাকেই। এমবিবিএসের পর থাকে পোস্ট গ্যাজুয়েশনের চাপ। তার জন্য পড়াশোনাও থাকে। পড়াসোনা শেষ করে শুরু হয় পেশাগত জীবন। কেউ যোগ দেন সরকারি ক্ষেত্রে, কেউ বা বেসরকারি।
সঙ্গে নিজের মত প্র্যাকটিসও থাকে অনেকের ক্ষেত্রে। তাই খুব কম সংখ্যক ডাক্তারই নিয়ম করে জিম, শরীরচর্চা বা সাঁতার কাটার সুযোগ পান। নিজেদের ফিট রাখতে তাঁরাই স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা বলেন। কিন্তু খিদের মুখে নিজেরা খান প্যাকেটের পর প্যাকেট বিস্কুট বা ফাস্টফুড। খাবারের মধ্যে থাকে না কোনও গ্যাপও। আমাদের সমাজে প্রতিটি মানুষেরই মানসিক চাপ বড্ড বেশি। সঙ্গে রয়েছে প্রত্যাশার পারদ। একটা বয়সে আসার পরও যে তাঁরা চাপমুক্ত হতে পারেন সেরকমটাও নয়। ডাক্তাদের কাছে প্রত্যাশাও তাকে প্রচুর। বিশেষত তাঁরা যখন সিনিয়র হয়ে যান।
ডাক্তারদের অবসর বলে কিছু হয় না। একটা বয়সের পর তাঁরা চাকরি ছেড়ে দিলেও অনেকের অনুরোধে প্যাকটিস চালিয়ে যেতেই হয়। ডাক্তারদের ধর্মই এমন যে চোখের সামনে অসুস্থ মানুষদের দেখলে তাঁরা চুপ করে বসে থাকতে পারেন না। কিন্তু ততদিনে তাঁদের শরীরেও একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। শুধু শরীরচর্চাতে তাঁদের সমস্যার সমাধান হয় না। যে কারণে চিকিৎসকদের সুস্থতাই কিন্তু প্রশ্নের মুখে।