বর্তমান জীবনধারায় পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যায় কমবেশি সব মেয়েরাই ভোগেন। নানা কারণে সময়মতো ঋতুস্রাব হয় না। আবার অনেকেই ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে ব্যথা, পেশিতে টান ধরার সমস্যায় ভোগেন। ঋতুস্রাব সংক্রান্ত শারীরিক সমস্যাগুলোর পিছনে নানা কারণ দায়ী থাকতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলেও আপনি এই শারীরিক জটিলতাগুলোর সম্মুখীন হতে পারেন। শুনতে অদ্ভুত লাগলে, মানসিক চাপের কারণেও অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়।
মানসিক চাপ বাড়লে তার উপসর্গ দেহে লক্ষ্য করা যায়। অনিদ্রা, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি মানসিক চাপ বৃদ্ধিরই লক্ষণ। এটা যেমন আপনার দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা তৈরি করতে পারে, তেমনই প্রভাব ফেলতে পারে পিরিয়ডের সার্কেলের উপর। ঋতুস্রাবের সময় মহিলাদের শরীরে নানা হরমোনের তারতম্য ঘটে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা মানসিক চাপে থাকলেও ঘটে। মূলত, মানসিক চাপে থাকলে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে প্রজনন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। এর ফলে পিরিয়ড সার্কেল ব্যাহত হতে পারে।
মানসিক চাপের কারণে মহিলারা সবচেয়ে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভোগেন। ২৮ দিনের চক্র তাঁদের পূরণ হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেরীতে পিরিয়ড হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে পিরিয়ড শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে আবার ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ একই মাসে দু’বার পিরিয়ড হয়। আবার কারও ক্ষেত্রে এক থেকে দেড় মাস টানা ঋতুস্রাব চলে। সেক্ষেত্রে রক্তপাত বেশি না হলেও ঋতুস্রাব চলতে থাকে। এই অবস্থাকে অ্যামেনোরিয়া বলে। পাশাপাশি পিরিয়ডের সময় অত্যধিক তলপেটে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, কোমরের যন্ত্রণা অনুভব করেন।
আপনিও যদি মানসিক চাপের কারণে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভোগেন, তাহলে এই কয়েকটি টিপস মেনে চলতে পারেন-
১) প্রতিদিন যোগব্যায়াম করুন। এতে আপনার মন শান্ত থাকবে। পাশাপাশি হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। তাছাড়া যোগব্যায়াম করলে ঋতুস্রাবের সময় পেশির ব্যথা কম হবে।
২) ঘুমের দিকে নজর দিন। দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে অবসাদ, উদ্বেগ, বিষণ্ণতার লক্ষণগুলো জোরাল হতে শুরু হতে। এতে হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হয়। তাই ঘুমের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করা চলবে না।
৩) ডায়েটের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিন। শরীরে পুষ্টির ঘাটতি থাকলে মানসিক চাপ বাড়ে এবং ঋতুস্রাবের সময় পেশিতে ব্যথাও জোরাল হয়। তাই ডায়েটে ম্যাগনেশিয়া, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে রাখুন।