শীত আসার সময় এলেই ঘন ঘন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে শিশু থেকে প্রবীণরা। পুজোর আগে থেকেই ঘরে ঘরে ভাইরাল ফিভারের রমরমা শুরু হয়েছে। কোভিডের জাপট কমলেও আমাদের ছেড়ে এখনও কিন্তু এই মারাত্মক ভাইরাসটি যায়নি। সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বর তো আছেই সঙ্গে বেশ কিছু লক্ষণ নতুন করে সামনে আসছে। সাধারণ সর্দি বা ফ্লু ও কোভিড ১৯-এর উপসর্গগুলি প্রায় একই রকম। তাই বোঝার উপায় থাকে না আপনি কিসে আক্রান্ত। বর্তমানে সর্দি, ফ্লু ও কোভিড সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলি একইভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। কোনও রকম বিধিনিয়ম না মানায় সংক্রামিত মানুষের নাক, মুখ থেকে বের হওয়া ব্যাকটেরিয়াই আরও বিস্তার লাভ করছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম এখন অনেকটাই আলগা। ফলে এই ধরণের সমস্যাগুলি মাত্রাতিরিক্ত বেড়েই চলেছে। কিছু বোঝার আগেই সেগুলি সংক্রমিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
শীতের মুখে নিজেকে যদি সুস্থ রাখতে চান, তাহলে অবশ্যই টেস্ট ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা ও মাস্ক পরার সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ধরেই নিতে হবে আপনার মধ্যে করোনাভাইরাসের নয়া ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। এটা ভেবে নিলেই বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে। কাশি, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে অনবরত জল পড়া এগুলি সবই কোভিড১৯ এর উপসর্গ। আবার সাধারণ ফ্লুয়েরও একই লক্ষণ। অতিমারির প্রথমদিকে কোভিডে আক্রান্ত কিনা তা বোঝার জন্য সর্দি লাল চোখ, স্বাদ ও গন্ধ চলে যাচ্ছে কিনা তা দেখা হত। কিন্তু নয়া ভেরিয়েন্টের ডিগবাজিতে রোগীর মধ্যে এই উপসর্গগুলিও দেখা যাচ্ছে না। তবে কোভিড হননি, আবার অনেক আগে হয়ে গিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে কাশি থামার লক্ষণ নেই। করোনাভাইরাস সংক্রমিত হলেও বর্তমানে অনেক মানুষের মধ্যে কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু বোঝার আগেই সেই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা এখন বেশ প্রবল। কাশিকে লক্ষণ ভাবা হলেও করোনাভাইরাস ও ফ্লু উভয়ের মধ্যেই পার্থক্য করা কঠিন।
আপনার কি কোভিড কাশি আছে?
বর্তমানে কাশির মাত্রা ও শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছে নয়া চর্চা। কোভিড কাশির বৈশিষ্ট্য নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণ কাশি ৬-৭ দিনের মধ্য়েই সেরে যায়। কিন্তু কোভিড কাশি দীর্ঘস্থায়ী। শুধু তাই নয় শুকনো কাশিরও প্রবণতা রয়েছে। চিকিত্সকদের মতে, অনেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের প্রথম দিকে অল্প কাশি দিয়ে শুরু হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই কাশি আবার নতুন করে শুরু হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তা হয়ে চলেছে। প্রাথমিকভাবে কফমুক্ত হওয়ায় একনাগাড়ে কাশি হয়ে যাচ্ছে। তাতে শরীরে সর্বাঙ্গে ব্য়থা হয়ে ক্লান্তিভাব দেখা যাচ্ছে। সাধারণ ফ্লু হিসেবে ধরা হলেও অনেক স্বাস্থ্য সংস্থা এমন কাশিকে কোভিড উপসর্গ বলেই তালিকাভুক্ত করেছে।
একটানা শুকনো কাশি হলে তা যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। গলা. কন্ঠস্বর ও গভীর শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা সবই প্রভাবিত হয়। অনেকের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশি একটি সাধারণ সমস্যা। ঘন ঘন কাশিতে রোগীকে আরও ক্লান্তিকর করে তুলছে। বাড়ছে কাশির তীব্রতাও।
কী ভাবে বুঝবেন আপনার কোভিড কাশি হয়েছে কিনা! বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কিছু স্বতন্ত্র লক্ষণ রয়েছে যা সনাক্ত করতে সুবিধা হবে যে আপনার করোনাভাইরাস সংক্রমিত কাশি রয়েছে কিনা।
কোভিড কাশি হলে কী করবেন?
উপরের লক্ষণগুলি যদি আপনার মধ্য়ে দেখা যায়, তাহলে বুঝবেন আপনি কোভিড কাশিতে আক্রান্ত। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়ির বাইরে না বের হওয়াই ভাল। ঘন ঘন কাশি হলে সংক্রমণ ছড়াবে বেশি। বায়ুর মধ্যে ফোঁটা ফোঁটা জলবিন্দুগুলি ছড়িয়ে পরে বা কারোর গায়ের উপর পড়লে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অসুস্থ করে তুলতে পারে। কোভিডের সমস্ত বিধিনিষেধগুলি মেনে চলুন। কোভিড কাশির চিকিত্সার জন্য সঠিক ওষুধ ব্যবহার করুন। নিজে থএকে কাফ সিরাপ খেতে যাবেন না। আয়ুর্বেদিক ভেষজ গ্রহণ করতে পারেন। তাতে শ্বাসযন্ত্রের পরিস্থিতি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়াই নিরাময়ের জন্য বিকল্প কিছু নেই। প্রয়োজনে কোন ওষুধ ও ভেষজ ব্যবহার করবেন, তা একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।