একটা সময় ছিল যখন মানুষ ভাবত ৬০-এর কোটা পূরণ না করলে হার্ট অ্যাটাক হয় না। কিন্তু এখন পাল্টে গিয়েছে সেই ধারণা। বরং হার্ট অ্যাটাক এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঘটনা তরুণদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। ২৫% হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা ৪০ থেকে ৫০ বছরের মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। এমনকী ২০ থেকে ৩০ বছরের তরুণদের মধ্যে আর বিরল নেই হার্ট অ্যাটাক। কিন্তু এত কম বয়সে কেন দেখা দিচ্ছে হৃদরোগের সমস্যা? এর পিছনে দায়ী অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা। সুতরাং, সচেতনতা ছাড়া কোনওভাবেই আপনি উপেক্ষা করতে পারবেন না এই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
শরীরে রক্ত চলাচল ঠিকমতো না হলে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। হৃৎপিণ্ডে যখন রক্ত পৌঁছায় না তখন শিরার উপর চাপ পড়ে এবং হার্ট অ্যাটাক হয়। এই রক্ত চলাচল ঠিকমতো না হওয়া কিংবা রক্ত জমাট বাঁধার পিছনে কোলেস্টেরল একটি বড় ভূমিকা পালন করে। কোলেস্টেরল হল একটি মোম জাতীয় পদার্থ। এটা আমাদের শরীরেই থাকে। কিন্তু যখন ভাল কোলেস্টেরলের বদলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় তখনই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা। যাঁরা বেশি ধূমপান করেন, তাঁদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। কোলেস্টেরল ছাড়াও ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে।
কম বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার পিছনে খাদ্যাভাস, ধূমপান, মানসিক চাপ এবং শরীরচর্চার অভাব মূলত দায়ী। বর্তমানে যুব সমাজের মধ্যে অনিদ্রার সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাত থেকে আট ঘণ্টা টানা না ঘুমলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হল কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল কীভাবে তরুণদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো যায়। একমাত্র জীবনধারায় পরিবর্তন এনে আপনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।
-ডায়েটের দিকে বিশেষ নজর দিক। ফল ও শাকসবজি বেশি করে খান।
-রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত, প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
-চিনি ও নুন সীমিত পরিমাণে খান।
-ধূমপান ত্যাগ করুন।
-রাশ টানুন মদ্যপানেও।
-ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ওবেসিটি হৃদরোগের সঙ্গে শরীরে অন্যান্য জটিলতা তৈরি করে।
-আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বা ডায়াবেটিসের রোগী হন তাহলে দিনে ৩০ মিনিট অবশ্যই টানুন।
-নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। যোগব্যায়াম করুন। প্রয়োজন সাঁতার, সাইকেলিংয়ের মতো ক্রিয়াকলাপও করতে পারেন।
-মানসিক চাপ কমান।
-দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।