দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়ে গিয়েছে। এই গরমে কষ্ট ছোট থেকে বড় সকলের। চাঁদিফাটা রোদে আপনাকে যেমন অফিস বেরোতে হচ্ছে, তেমনই খুদেও যাচ্ছে স্কুলে। যদি শিক্ষাদফতর ২২ এপ্রিল থেকে স্কুলে গরমের ছুটির ঘোষণা করেছে। বেসরকারি স্কুলগুলোতেও ২২ তারিখ থেকে গরমের ছুটি পড়বে কি না তা নিশ্চিত নয়। যদিও এ দু’দিনও তাপপ্রবাহের মধ্যেই পিঠে ব্যাগ নিয়ে স্কুল যেতে হবে। আপনার সন্তান এই গরমে অসুস্থ হয়ে না পড়ে, তা দেখার দায়িত্ব আপনারই। হিট ওয়েভের হাত থেকে সন্তানকে কীভাবে রক্ষা করবেন, পরামর্শ দিচ্ছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার।
ডাঃ পোদ্দার জানিয়েছেন, এই গরমে বাচ্চার দেহে কোনওভাবেই জলের ঘাটতি হতে দেওয়া যাবে না। সাধারণ জলের পাশাপাশি বাচ্চাকে নুন-চিনির জল খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে ওআরএস-এর জলও খাওয়াতে পারেন। এতে দেহে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
দেহে তরলের ঘাটতি বজায় রাখার পাশাপাশি বাচ্চার খাওয়া-দাওয়া নিয়েও সচেতন থাকতে হবে। ডাঃ সুমন পোদ্দার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “দেহে তরলের ঘাটতি বজায় রাখার জন্য ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে মরসুমি ফল রাখুন। যে সব ফলে জলের ভাগ বেশি যেমন তরমুজ, শসা, পাকা পেঁপে ইত্যাদি বেশি করে খাওয়ান বাচ্চাকে। কিন্তু রাস্তার কাটা ফল একদম খাওয়াবেন না।”
ছোট হোক বা বড়, বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪ টের মধ্যে বাড়ির বাইরে বেরোতে বারণ করা হচ্ছে সকলকেই। স্কুলে যেতে হবে চোখে সানগ্লাস আর মাথায় টুপি আবশ্যিক। আর অবশ্যই হাত-পায়ে ও মুখে সানস্ক্রিন মাখিয়ে দিন। ভেজা রুমাল দিয়ে ঘন ঘন নাক মুখ মুছিয়ে দিন খুদের। এরপরও লু লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে কী করণীয়? এই প্রসঙ্গে সুমনবাবু বলেন, “তৎক্ষণাৎ তাকে কোনও ছায়ায় বসিয়ে জামাটা হালকা করে খুলে দিন। যতটা শোভনীয় ততটাই খুলে দিন। এর পাশাপাশি সাধারণ জলে রুমাল ভিজিয়ে গা, হাত-পা মুছে দিন। সেই সঙ্গে ওআরএস কিংবা নুন, চিনির জল খাওয়ান।”
৪০ ডিগ্রিতে বেশিক্ষণ রোদে থাকা চলবে না কারওই। কিন্তু রোদ থেকে এসেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢুকে পড়লেই বিপদ। এতে সর্দি-গর্মি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এই গরমে জ্বর-সর্দির হাত থেকে সন্তানকে রক্ষা করার টিপস শেয়ার করেছেন ডাঃ পোদ্দার। ডাক্তারবাবু বলেছেন, “রোদ থেকে বেড়িয়ে এসে বাড়ি ঢুকে বাচ্চাকে একদম ঠান্ডা জল খেতে দেবেন না। এমনকি এসি রুমেও ঢুকতে দেবেন না। প্রচণ্ড গরম থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডা—এই ট্রানজ়িশনের মধ্যে কিছু সময় দিন, যাতে শরীরটা আবহাওয়ার সঙ্গে খাপখাইয়ে নিতে পারে। তবে, এসি ঘরে থাকলেও তাপমাত্রা খুব কম রাখবেন না।”