অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করল বর্ষা। মঙ্গলবার রাতে ভিজল কলকাতা-সহ বেশ কিছু জেলা। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পুরোদমে বর্ষা আসতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গে। ভ্যাপসা গরমে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও স্বাস্থ্যের জন্য এটাই বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। বিশেষত, বর্ষা আসা মানেই বাড়ির খুদেকে নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু। কখনও বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর-সর্দি, আবার কখনও বাইরের খাবার খেয়ে পেট খারাপ। যদিও ২৬শে জুনের আগে খুলছে না স্কুল। তবু বর্ষার সঙ্গে রোগের প্রকোপের সম্ভাবনা কোনওভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যায় না। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে TV9 বাংলা যোগাযোগ করেছিল শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দারের সঙ্গে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, চিকিৎসকের পরামর্শ..
বর্ষায় কী-কী রোগের ঝুঁকি বাচ্চাদের মধ্যে বেশি?
প্রথমত, ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে। এই ঠান্ডা-গরম পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের মধ্যে যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণেরই সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এতে জ্বর, সর্দি, কাশির হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
দ্বিতীয়ত, বর্ষায় জলবাহিত রোগের সম্ভাবনাও বাড়ে। জলবাহিত জীবাণুর কারণে পেট খারাপ, পাতলা পায়খানা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এ-র মতো রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের ভাইরাল ডায়রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্ষার জমা জল থেকে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মশার উপদ্রব বাড়ে। তা-ই কোনওভাবেই মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি উপেক্ষা করা যায় না।
বর্ষায় বাচ্চাদের মধ্যে যে ভাইরাল ফ্লু অর্থাৎ সর্দি-কাশির সমস্যা বেশি দেখা যায়, তার প্রতিরোধে কী-কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
প্রথমত, বাচ্চার যেন সব টিকাকরণ করানো হয়, সেই দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। যে-যে রোগের টিকা হয়, সেগুলো অবশ্যই সময়মতো নিয়ে নিতে হবে। এতে একাধিক রোগের ঝুঁকি এড়ানো যায়। এর মধ্যেই রয়েছে ফ্লু টিকা। তবে এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই যে, টিকা নিলেই এড়ানো যাবে রোগের ঝুঁকি। তবে হ্যাঁ বাড়াবাড়ি হবে না, পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে।
কয়েকদিন পর স্কুল খুলবে। তখন বাচ্চারা একে-অপরের সংস্পর্শে আসবে। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। যদি আপনার সন্তানের জ্বর-সর্দির কোনও উপসর্গ থাকে, তাহলে তাদের এমনও কোনও জায়গায় নিয়ে যাবেন না যেখান থেকে ভাইরাস অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কোভিডের ভয় এখনও কাটেনি। করোনা পরিস্থিতিতে আমরা স্যানিট্যাইজেশন, সামাজিক দূরত্ব এবং মাস্কের ব্যবহার শিখেছি। এই কোভিড-বিধিগুলো এখনও মেনে চলতে হবে। এতে ভাইরাস গঠিত ফ্লু-এর ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
যদি কোনও বাচ্চা ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয় কিংবা পেট খারাপ হয়, তাহলে কী করণীয়?
ডায়ারিয়া হলে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়। এর পাশাপাশি ঘাটতি দেখা দেয় সোডিয়াম, পটাশিয়ামের। এই পরিস্থিতিতে জলই একমাত্র সমাধান। যত বেশি পায়খানা, বমি হচ্ছে, তত বেশি জল পান করাতে হবে বাচ্চাকে। এক্ষেত্রে আপনি ওআরএস-এর জল খেতে পারেন। এর পাশাপাশি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।