কখনও গরম কখনও বৃষ্টি- আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কখনও ঘাম তো কখনও হঠাৎ ঠান্ডার অনুভূতি- সব মিলিয়ে শরীর যাচ্ছে বিগড়ে। আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তি বেশি থাকায় ঘাম বেশি হচ্ছে। ঘাম বেশি হলেই শরীরে ডিহাইড্রেশন দেখা দেওয়া খুব স্বাভাবিক। গরমে পেটের রোগও অনেক বেশি হয়। ঠিকমতো হজম না হওয়া, খাবারে বিষক্রিয়া, হাত না ধুয়ে খাবার খাওয়া-এসব থেকেই আসে পেটের সংক্রমণ। যে কারণে গরমের দিনে বেশি ডায়েরিয়া হয়। পেট খারাপ, বদহজম, গ্যাস-অম্বল এসব লেগেই থাকে। গরমের দিনে বাইরের জল আর বাইরের খাবার এড়িয়ে চলার কথা বলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সব সময় তা সম্ভব হয় না। উপায় না থাকলে তখন বাইরের খাবার খেতেই হয়। সারাসপ্তাহ কাজের পর উইকেন্ড সবাই একটু আরামে কাটাতে চান। আর স্বাভাবিক ভাবেই তখন খাওয়া দাওয়া বেশি হয়। পেট খারাপ হলে শরীর থেকে ইলেকট্রোলাইটস বেরিয়ে যায়। বেশি পরিমাণে ইলেকট্রোলাইটস বেরিয়ে গেলে কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পেট খারাপ, ডায়ারিয়া (Diarrhea) এসব কিন্তু দুটো কারণের জন্য হয়। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মিলিত প্রকোপে এই সমস্যা হয় সবচাইতে বেশি। তাই প্রথমেই যা দেখা দরকার তা হল কেন হচ্ছে। তবে সবার শরীরে সমস্যা একরকম নয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শই সবচাইতে জরুরি।
তাই এই গরমে যা কিছু মেনে চলতেই হবে-
বাইরের খাবার একেবারেই চলবে না। আর খেলেও পরিষ্কার হাতে তা খেতে হবে। নিজের জন্য ব্যাগে আলাদা জলের বোতল রাখুন। গ্রেভিযুক্ত খাবার বা খুব বেশি ভাজা খাবার খাবেন না। মাছ বা মাংসের তৈরি কোনও খাবার গরমে চটপট নষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারেও কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে।
হাতের সামনে এআরএস রাখুন। বেশিবার বমি বা পেটখারাপ হলে ওআরএস খাওয়া জরুরি। এতে শরীরের সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য নেমে যায়। আর এই সোডিয়াম-পটাশিয়ামের তারতম্য হলেই সেখান থেকে আসে একাধিক সমস্যা। এমনকী প্রাণহানিও হতে পারে। আর তাই প্রথম থেকে বিষয়টি নিয়ে সচেতন থাকবেন।
নুন-চিনির জল ভাল, কিন্তু অবস্থার বাড়াবা়ড়ি হলে সেক্ষেত্রে এই টোটকা কাজে আসে না। তখন ও আর এস খেতেই হবে। সেই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। জল বেশি করে খেতেই হবে। যদি মনে হয় যে গ্যাস বা অ্যাসিড হয়েছে তাহলে বার বার ইষদুষ্ণ জল খান।
নিজে থেকে ওষুধ খাবেন না
জ্বর, বমি, পেটখারাপের নানা কারণ থাকে। অতিরিক্ত গরম, উল্টোপাল্টা খাওয়া থেকে হতে পারে আবার কোনও ব্যাকটেরিয়ার কারণে হতে পারে। তাই প্রাথমিক ভাবে ওআরএস এবং খুব সাধারণ কোনও পোটখারাপের ওষুধ খাওয়ার পর দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। আপনার সমস্যা অনুযায়ী যথাযথ ওষুধ কিন্তু তিনিই আপনাকে দিতে পারবেন।
গরমের দিনে যতই লোভ হোক না কেন বাইরের কাটা ফল, জুস, তেল-মশলাদার খাবার, ভাজা খাবার, মাছ, মাংস এসব এড়িয়েই চলতে বলছেন চিকিৎসকরা।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।