মুসুর ডাল, টমেটো ছুঁয়ে দেখেন না। পায়ের গোড়ালিতে অসম্ভব ব্যথা। পা মাটিতে ফেলা যাচ্ছে না। কারণ শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়েছে। এই সমস্যা আপনার একার নয়। বিশ্বের প্রায় ৫ কোটি মানুষ এই একই সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছেন। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে সহজে বুঝতে পারেন না কেউই। কিন্তু গাঁটের ব্যথা, পায়ের বুড়ো আঙুল ও গোড়ালির ব্যথা লক্ষণ হিসেবে জানান দেয় ইউরিক অ্যাসিডের কথা। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ডাক্তারের দ্বারস্থ হন। ইউরিক অ্যাসিডকে বশে রাখার জন্য ওষুধের পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার উপরও নজর দিতে হয়। কারণ প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বেরিয়ে যায়। যদিও এক্ষেত্রে আপনি আয়ুর্বেদের সাহায্য নিতে পারেন।
বিপাকীয় ক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে পিউরিন তৈরি হয়। শরীরে যদি ইউরিক অ্যাসিড জমতে শুরু করে তখনই গাঁটে ব্যথা, কিডনি পাথর তৈরির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আপনি আয়ুর্বেদিক ভেষজ গিলয়ের সাহায্য নিতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরিক অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে বেশ কয়েকটি টিপস মেনে চলতে হবে। যেমন, প্রতিদিন ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খান। বিপাকীয় হার বাড়লে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যাও ধীরে ধীরে কমে যাবে।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, গিলয় হল এমন একটি ভেষজ উপাদান যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জার্নাল অফ ফার্মাকোগনোসি অ্যান্ড ফাইটোকেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গিলয়ের কাণ্ড থেকে যে রস পাওয়া যায় তা গাউটের চিকিৎসার জন্য দারুণ উপকারী। কারণ এই ভেষজ উপাদানটি শরীরে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ২০১৭ সালের ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ইউরিক অ্যাসিডের চিকিৎসায় দারুণ কাজ করে গিলয়। কিন্তু সমস্যা হল, অনেকেই জানেন না যে, কীভাবে গিলয়কে ব্যবহার করবেন।
গিলয়ের কাণ্ড, পাতা সব কিছুই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই আপনি গিলয়ের যে কোনও অংশ নিতে পারেন। গিলয়ের ডাল ও পাতা নিয়ে সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে উঠে এই মিশ্রণটি ফুটিয়ে নিন। জল অর্ধেক হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন। তারপর এটা ছেঁকে নিয়ে পান করুন। এতে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আরও একটি উপায়ে আপনি গিলয় ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে গিলয়ের ট্যাবলেট ও পাউডার পাওয়া যায়। সেটা কোনও জুসের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন। এতেও কাজ হবে।