গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ভারতে নিম্নগামী কোভিডের গ্রাফ। কমতে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা। টানা তিন দিন রাজ্যে নেই কোনও কোভিড মৃত্যুও। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আবারও ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে দেশ। বেশ কিছু জায়গায় শিথিল হয়েছে কোভিড বিধিও। স্কুল খুলেছে। অনেক অফিসই ওয়ার্ক ফ্রম হোম বন্ধ করে দিয়েছে। সব যখন আবার আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চাইছে তখনই বিজ্ঞানীদের মনে উদ্বেগ বাড়িয়েছে কোভিডের এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট XE। নতুন এই রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট প্রথম ধরা পড়ে ইংল্যান্ডে। বুধবার ভারতে প্রথম এই XE ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের হদিশ মেলে মুম্বইতে। কয়েকদিন আগেই নতুন এই স্ট্রেন সম্পর্কে সকলকে সচেতন করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর বলা হয়েছিল ওমিক্রন BA.1, BA.2-এর সংমিশ্রণ হল এই রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট। আর এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের থেকে প্রায় ১০ গুণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। ওমিক্রনও আছড়ে পড়েছিল সুনামির আকারে। কিন্তু ওমিক্রনে সংক্রমণের জন্য হাসপাতালে ভর্তির ঘটনা তেমন ঘটেনি। তবে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন।
আর এই ওমিক্রনের হাত ধরেই কিন্তু বিশ্বে প্রবেশ করেছিল কোভিডের তৃতীয় ঢেউ। যদিও তখন অনেকেই কোভিডের দুটো টিকা পেয়ে গিয়েছিলেন। তবুও থামানো যায়নি সংক্রমণ। আর তখন থেকেই ফের শুরু হয় বুস্টার ডোজের তোড়জোড়।
XE সংক্রমণের ৬৩৭ টি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। ভারতে এই প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মিলল মুম্বইতে। এর আগে লন্ডনে এই দুই ভ্যারিয়েন্টের জোড়া ফলকে ৬৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল অক্টোবর ২০২১। তারপর খোঁজ মেলে এবছরের জানুয়ারিতে। তবে এই ভাইরাসের তীব্রতা কতটা হবে, কত দ্রুত সংক্রমণ ছড়াবে সেই সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ কিন্তু এখনও আমাদের হাতে নেই। এমনকী এই ভ্যারিয়েন্টে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী হবে তাও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
এখনও পর্যন্ত এই ভ্যারিয়েন্টের আলাদা কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। প্রথম থেকেই কোভিডের যে সব লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল তাই রয়েছে। জ্বর, ঠান্ডালাগা, মাথা ধরা, ক্লান্তি, দুর্বলতা, পেশিতে ব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি ভাব এসবই কিন্তু প্রধান। এর বাইরে আলাদা কোনও উপসর্গ নেই। হাসপাতালে ভর্তির জটিলতা কিংবা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কথাও শোনা যায়নি।
তবে কোভিড থেকে রক্ষা পেতে একমাত্র উপায় হল ভ্যাকসিন। আর তাই ভ্যাকসিন কিন্তু নিতেই হবে। ইতিমধ্যে দেশের অনেকেই দুটি ডোজ পেয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে শিশুদের টিকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রবীণদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সুস্থ থাকতে সকলকেই ভ্যাকসিন নিতে হবে। রোগ জীবাণু থেকে দূরে থাকতে এবং সুস্থ থাকতে ভরসা ভ্যাকসিনই।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।