মূলত ২৫ থেকে ২৮ দিনের ব্যবধানে ঋতুস্রাব হয়। যদিও ৩৫ দিনের কম সময়কালকেও স্বাভাবিক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই সম্পূর্ণ বিষয়টি নির্ভর করে মহিলাদের হরমোন ও শারীরিক অবস্থার ওপর। যার ফলে প্রত্যেকের ঋতুস্রাবের সময় একে অপরের থেকে আলাদা হয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অর্থাৎ ২৫ থেকে ২৮ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় ঋতুস্রাব হলে সেখানে কোনও অসুবিধা হয় না। কিন্তু অনেকের একই মাসে দু’বার ঋতুস্রাব হয়ে যায়। আবার কারোর তিনবারও হয়। এই বিষয়টি কি উদ্বেগের কারণ? চলুন জানা যাক…
মাসে দুই বা তার বেশি ঋতুস্রাব হওয়া, এক-দু মাস ছাড়া একবার ঋতুস্রাব হওয়া- এই ধরনের ঘটনাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলা হয়। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণা সাবধান হওয়া জরুরি। ঋতুস্রাব নারী শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এই প্রক্রিয়া কোনও গন্ডগোল হলে, অন্যান্য শারীরিক অবস্থার মতই সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ নারী দেহে ঋতুস্রাব জনিত কোনও সমস্যা দেখা দিলে তা ভবিষ্যতে অন্যান্য রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণে, ওভারিতে টিউমার ও ওভারিয়ান ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এমনকি ভবিষ্যতে গর্ভধারণেও একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই সময় থাকতেই এই অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যার চিকিৎসা করানো দরকার। কিন্তু এমন ঘটনা কেন ঘটে? এর পিছনে বিভিন্ন কারণ দায়ী।
আপনি যদি মেনোপজের দিকে এগিয়ে যান, সেই ক্ষেত্রেও আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এতে ভয় পাওয়া কিছু নেই। তবে মেনোপজের সময় শরীরে একাধিক পরিবর্তন আসে। সুতরাং আপনার বয়স যদি ৫০ এর আশেপাশে হয়, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
এছাড়া স্থূলতা এই অনিয়মিত ঋতুস্রাবের একটি বড় কারণ। এই ক্ষেত্রে ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন এবং ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। এছাড়াও যদি ওভারিতে সিস্ট থাকে কিংবা থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলেও মাসে দু’বার ঋতুস্রাব হতে পারে। অন্যদিকে, এই সব কারণে অতিরিক্ত পরিমাণ রক্তপাতও হয়। সেই ক্ষেত্রেও সচেতন হন, নয়তো ভবিষ্যতে রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেবে। একই ভাবে মানসিক চাপের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও দুটি কারণ রয়েছে, যার জন্য কোনও কোনও মাসে এই দু’বার ঋতুস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রথমত গর্ভাবস্থা এবং দ্বিতীয়টা হল গর্ভপাত। আমরা মনে করি গর্ভাবস্থা মানেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু গর্ভবতী হওয়ার পরে মাঝখানে রক্তপাত হয়। বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে। যৌন মিলন বা ওয়ার্ক আউট করার পরেও এটি ঘটে। অন্যদিকে, গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া সাধারণ ব্যাপার। তবে এটি গর্ভপাতের লক্ষণও হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এর জন্য চিকিৎসকের সঙ্গেও যোগাযোগ করা উচিত।
আরও পড়ুন: মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই কারোর! ফলত আমরা শিকার হই ইমোশনাল হাইজ্যাকিংয়ের