ভারতীয় সঙ্গীত জগতে কৈলাশ খেরের নাম জ্বলজ্বল করছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পশ্চিম থেকে পূর্ব, সব প্রান্তেই কৈলাশ খেরের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। শুধুমাত্র সিনেমার প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে নন, আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় গানেও সমান জনপ্রিয়। তবে এই সাফল্য ও উন্নতি একদিন আসেনি। কঠিন পরিশ্রমের পিছনেও রয়েছে এক অন্ধকার দিন। সেই দিনের সংখ্যা অগণিত। কারণ কেরিয়ারে সাফল্যে পাওয়ার পিছনে ছুটতে ছুটতে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন এই বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পীও। লাগাতার ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে হতে বিধ্বস্ত হয়ে একটা সময় আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন তিনি। এমন কথা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন এক সাক্ষাত্কারে।
বেশ কয়েকটি ব্যবসা ও চাকরিতে ব্যর্থ হওয়ার পরে, কৈলাশ খের আধ্যাত্মিকতা ও ধর্মীয় নানা পাঠ শিখতে ঋষিকেশে যান। কিন্তু সেখানেও তিনি সবার থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করেন। গ্রাস করে একাকীত্বও। একদিন তিনি বিধ্বস্থ হয়ে আত্মহত্যা করতে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য় সহায় থাকায় একজন সহৃদয় গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে তাঁর প্রাণ বাঁচান। এই চরম পরিস্থিতির মুখোমুখি কেন হতে হল, তা জানুন এখানে…
মিসফিট
এমন অনেকে আছেন যারা নিজের মতো করে থাকতে পছন্দ করেন, নিজের মতো করে বোঝেন, নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু যখন একজন নিজেকে সবার থেকে আলাদা মনে করেন, তখন তার মনের মধ্যে নেগেটিভিটি ঘিরে আসতে থাকে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে মিস ফিট হওয়ার অনুভূতি খুব বিপজ্জনক পরিণতি হতে পারে। কৈলাশ খেরও স্বীকার করেছেন যে তিনি প্রতিটি কাজেই মিস ফিট অনুভব করতেন।
মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার অনুভূতি প্রায় সবসময় হলে তা বিপজ্জন। মানসিক স্বাস্থ্য এমন হয়ে থাকে যে কোনও শান্তি ও আধ্যাত্মিকপূর্ণ জায়গাতে গিয়েও মন মানে না। এমনটাই হয়েছিল কৈলাশ খেরের সঙ্গে। ঋষিকেশের পবিত্র ভূমিতেও কৈলাশ খেরকেও সুখী হতে দেয়নি। ৪৯ বছর বয়সী গায়ক জানিয়েছিলেন, তিনি প্রথমেই সাফল্যের পথ দেখেননি। সেখানে গিয়ে চরম সমস্যাগ্রস্ত ও অবসাদে পূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেন ঋষিকেশের এক সাধক। সেই সাধকই অন্ধকার কূপ থেকে বের করে দেশের বিখ্যাত এই গায়ককে আলোর দিশা দেখান। সেই থেকে সাফল্যের পথ চলা শুরু।
বিষণ্নতা, স্ট্রেস এবং উদ্বেগের মতো মানসিক রোগে ভুগছেন এমন রোগীদের মধ্যে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়া কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। অনেক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা বেশি সংবেদনশীল তাদের সঙ্গে নেতিবাচক কথা বলা উচিত নয়। এর জেরে তাদের মধ্য়ে মানসিক স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটতে পারে।
– আপনি খুব বেশি ভাবছেন/বোধ করছেন। এটা এত বড় ব্যাপার নয়। আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে নিজের মতো করে।
– সব কষ্টের কারণ আপনার চিন্তাভাবনা। এভাবে থাকলে কেউ সাপোর্ট করবে না, এমন ভাবাটাও ভুল।
– যাঁরা বেশি স্পর্শকাতর মনোভাবাপন্ন, তাদের সঙ্গে বেশি করে কথা বলুন, কথা শুনুন, বুঝুন।
– ছোট ছোট জিনিস দিয়ে তাদের বিশেষ অনুভূতি আদায় করুন।
– যেখানে তাদের বিশেষ প্রশ্ন লুকিয়ে রয়েছে, সেগুলি সন্ধান করা ও তাদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)