Norovirus: দেশজুড়েই ফের বাড়ছে কোভিড আতঙ্ক। বিপদসীমায় রয়েছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরালা। দ্রুত গতিতে না হলেও রাজ্যে বাড়ছে কোভিড। স্বাস্থ্য ভবনের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় এ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরির গণ্ডি পার করেছে। পজিটিভিটি রেট এক শতাংশের বেশি। শনি-রবিবার ছুটি থাকায় টেস্ট কম হয়। এমন দিনেও এক শতাংশের বেশি পজিটিভিটি রেটে উদ্বেগের কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। গত ২৪ ঘণ্টার রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ জন। মৃত্যু হয়েছে একজনের। ২৫জন রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৭৩ জনকে। সংক্রমণের খবর মিলতেই ফের নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্যভবন। কোভিড আতঙ্কের মাঝেই কেরলে রবিবার দুজন শিশুর শরীরে মিলেছে নরোভাইরাসের খোঁজ। অতি সংক্রামক এই ভাইরাস মূলত খাবার আর নোংরা জলের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে। আর তাই যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কেরলের অধিবাসীদের বারবার সতর্ক করছে সে দেশের সরকার।
কেরলে যে দুই শিশুর মধ্যে এখনও পর্যন্ত নরোভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে তাদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। উদ্বেগ না থাকলেও সকলকে সাবধানে থাকতে হবে। মেনে চলতে হবে যাবতীয় সতর্কতা বিধি, এমনটাই বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
নরোভাইরাস কী?
নরোভাইরাসকে অতি সংক্রামক ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বমি, ডায়রিয়া এসব লেগেই থাকে। শরীরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই ভাইরাসের সংক্রমণে। যে কারণে এই ভাইরাসটিকে পেট ফ্লুও বলা হয়। তবে শুধু শিশুরাই নয়, এই নরোভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন যে কেউ। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তরফে জানানো হয়েছে, একজম মানুষ একাধিকবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। কারণ এই ভাইরাস বিভিন্ন রূপে আশপাশে ছড়িয়ে রয়েছে। একবার সংক্রমিত হলেই যে দ্বিতীয়বার শরীরে রোগ-প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যাবে এরকম নয়।
পূর্ববর্তী গবেষণা অনুসারে মানবদেহে যে নরোভাইরাসের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে তা আগে নরওয়াক ভাইরাস নামে পরিচিত ছিল। নরওয়াক-OH ভাইরাসটির প্রার্দুভাবের কারণেই গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের মতো সমস্যা জেঁকে বসেছিল। আক্রান্তদের সকলের মলের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে ওই ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছিল। এটিই প্রথম ভাইরাল এজেন্ট যা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের কারণ হুসেবে দেখানো হয়েছিল। শীতেই প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। ১৯২৯ সালে যখন এই ভাইরাসের আক্রমণ প্রথম হয় তখন একে ‘শীতকালীন বমি রোগ’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। ভাইরাসে তখন যাঁরা আকান্ত হয়েছিলেন তাঁদের সকলেরই বমি বমি ভাব, বমি, পেটে ব্যথা, খিঁচুনি, জ্বর, ডায়রিয়া-সহ একাধিক উপসর্গ ছিল। প্রায় ৯৮ শতাংশ সংক্রমিতের ক্ষেত্রেই এই রোগ-লক্ষণ ছিল।
যে ভাবে ছড়ায় এই ভাইরাস
নরোভাইরাসকে অতিসংক্রামক ভাইরাস হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছিল। সরাসরি আক্রান্তের সংস্পর্শে আসলে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানি বেড়ে যায়। এছাড়াও দূষিত খাবার, ভাইরাস দ্বারা দূষিত কোনও তরল, হাত-মুখ না ধুয়ে খাওয়ার খাওয়া, আক্রান্ত ব্যক্তির হাত থেকে সরাসরি খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই ছড়ায় এই ভাইরাস। এছাড়াও দূষিত জল বা কোনও খাবারে সংক্রমণ হয়েছে সেখান থেকেও কিন্তু ছড়াতে পারে এই ভাইরাস।
উপসর্গহীন আক্রান্ত
কোভিডের মতোই এই ভাইরাসের ক্ষেত্রেও থেকে যায় উপসর্গহীন আক্রান্তের সম্ভাবনা। অনেকক্ষেত্রে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সেই ব্যক্তির শরীরে কোনও রকম লক্ষণ না থাকলেও তিনি কিন্তু অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারেন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।