প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে মহা সমারোহে পালন করা হয়। বাড়িতে, বাগানে, ফাঁকা জায়গা পেলেই গাছ লাগানো হয়, পরিবেশ সচেতনতা মূলক একাধিক কর্মসূচী থাকে। সব কিছুই নিয়ম মাফিক হয় তবুও মানুষ সচেতন হচ্ছে কি! নগর-শহর গড়তে অবিচারে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। আয়তনে বাড়ছে শহর, গজাচ্ছে নতুন শপিং মল-মার্কেট কমছে গাছের সংখ্যা। গাছের সংখ্যা ক্রমাগত কমছে বলেই বাড়ছে দূষণ। একথা সকলেই জানেন। দূষণের ফলে কী কী হচ্ছে তাও অজানা নয়। তবুও গাছ লাগানোর পরিবর্তে কমিয়ে ফেলা হচ্ছে বনাঞ্চল। এই অতিরিক্ত গরম, কখনও খরা কখনও বন্যা এসবের নেপথ্য কারণ পরিবেশ দূষণ। দূষণের ফলে বাতাসে ক্ষতিকর রাসায়নিকের পরিমাণ বাড়ছে। খাবার, জল, বাতাস থেকে শুরু করে দৈনন্দিন ব্যবহার্যের জিনিস সবই পড়ছে দূষণের কবলে। আর যে কারণে বাড়ছে ক্যানসারের ঝুঁকি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের সমীক্ষা অনুসারে, পরিবেশ দূষণের কারণে এমন কিছু ৫৪ টি যৌগ তৈরি হয় যা ক্যানসারের অন্যতম কারণ। পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ মানুষই। নিজেদের দোষেই আমরা নিজেদেরকে ঠেলে দিচ্ছি মারণ রোগের দিকে। দূষণের ফলে বর্তমানে ভীষণই বেড়েছে এই সব ক্যানসারের ঝুঁকি। সেই তালিকায় রয়েছে-
ব্লাড ক্যানসার
ত্বকের ক্যানসার
বিভার ক্যানসার
মূত্রাশয়ের ক্যানসার
ফুসফুসের ক্যানসার
স্তন ক্যানসার
ওরাল ক্যানসার
দূষণের অন্যতম কারণ হল বেঞ্জিন। বেঞ্জিন অতি ক্ষতিকারক একটি রাসায়নিক যৌগ। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হল এই অতি ক্ষতিকারক বেঞ্জিন। এই বেঞ্জিন ব্লাড ক্যানসারের অন্যতম কারণ। জল অআর বাতাসের মাধ্যমে তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এবং সেখান থেকে ক্যানসার সৃষ্টি করে।
রেডন হল প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয় গ্যাস। এই গ্যাস ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্যাঁতস্যাঁতে, নোংরা পরিবেশের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকলে এই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। দেওয়াল ফেটে জল চুঁইয়ে পড়লে বা দেওয়াল ফেটে গেলে রেডন গ্যাস বেশি পরিমাণে তৈরি হয়।
জল দূষণের মূল কারণ হল এই আর্সেনিক। আর্সেনিক একটি রাসায়নিক উপাদান। যা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও প্রাকৃতিক ভাবে মাটি আর জলের মধ্যেও থাকে আর্সেনিক। এই আর্সেনিক ত্বক, লিভার, মূত্রাশয় এবং ফুসফুসের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। দক্ষিণ কলকাতার প্রায় সর্বত্রই আর্সেনিক যুক্ত জল সরবরাহ করা হয়।
এসব ছাড়াও কলকারখানার ধোঁওয়া, বাসের ধোঁওয়া এসব থেকে তৈরি হয় বেশ কিছু রাসায়নিক উপাদান। এর মধ্যে থাকে অ্যাসবেস্টস, হেক্সাভ্যালেন্ট ক্রোমিয়াম, অ্যাফ্লাটক্সিন এবং ভিনাইল ক্লোরাইড। যার প্রভাব শরীরে মারাত্মক এবং ক্যানসারের জন্য দায়ী।